নীহারিকা মুখার্জ্জী,ফলতাঃ- অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে যখন একরাশ অভিযোগ সামনে আসছে তখন দীর্ঘদিন ধরে পাঠদান থেকে শুরু করে সৌন্দর্যায়ন, বিদ্যালয়ের শিশুদের জন্মদিন পালন থেকে ইলিশ উৎসব, দুর্গাঠাকুর দর্শন থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রেই বৈচিত্র্যের পরিচয় দিয়ে চলেছে বিখ্যাত বাঙালি বৈজ্ঞানিক আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসুর স্মৃতিধন্য দক্ষিণ ২৪ পরগণার ফলতা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়।
এতদিন ওদের পৃথিবী ছিল ‘খিড়কি থেকে সিংহদুয়ার’। অন্যরা যখন শীতকালে বেড়াতে যায়, ওরা তখন আড়ালে বসে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। যেখানে দু’বেলা সন্তানদের মুখে দু’মুঠো খাবার তুলে দিতে ওদের গরীব মা-বাবা হিমশিম খায় সেখানে সন্তানদের নিয়ে বেড়াতে যাওয়াটা ছিল দুঃস্বপ্ন। ফলে ওদের মনে একটা আফসোস ছিল।
সেই আফসোস দূর করার জন্য এবার ওদের জন্য শিক্ষামূলক ভ্রমণের আয়োজন করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রিজার্ভ বাসে গত ১৪ ই ডিসেম্বর বিদ্যালয়ের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী সবাই মিলে মহানন্দে বেড়িয়ে পড়ে শিক্ষামূলক ভ্রমণে। গন্তব্যস্থল ইকো পার্ক সহ কলকাতার একাধিক উল্লেখযোগ্য স্থান। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ইকোপার্কের এক নম্বর গেটের পাশে আয়োজিত হস্তশিল্প মেলাতেও একবার ঢুঁ মেরে দেওয়া। সঙ্গে কিছু কেনাকাটা ও খাওয়া দাওয়া। প্রতিটি ক্ষেত্রে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে শিশুরা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তিলক নস্কর বললেন – ওদের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে। স্বাভাবিক ভাবেই বেড়াতে যাওয়ার জন্য ওদের শিশুমন ছটফট করে। কিন্তু পরিবারের আর্থিক সামর্থ্য নাই। ওদের মনস্তত্ত্ব আমরা ভালভাবেই বুঝতে পারি। ওদের অবচেতন মনের সুপ্ত ইচ্ছে পূরণ করার জন্য শিক্ষামূলক ভ্রমণের আয়োজন করলাম। ওদের মুখের সরল ও পবিত্র হাসি আমাদের সবচেয়ে বড় প্রাপ্য।