সংবাদদাতা, আসানসোলঃ– অবশেষে আদালতের নির্দেশে ৪৬ দিন পর কড়া পুলিশি পাহারায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকলেন কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী।
প্রসঙ্গত গত প্রায় এক মাস ধরে অচলাবস্থা চলছে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে বহিস্কারের বিরোধীতায় ও উপাচার্যকে অপসারনের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালেয়র শিক্ষক ও শিক্ষক কর্মীদের একাংশ। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ বিভিন্ন দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত উপাচার্য। অন্যদিকে উপাচার্যের দাবি ডিএ আন্দোলনের সময় অনুপস্থিত শিক্ষক ও শিক্ষককর্মীদের নোটিশ পাঠানোর জন্য রেজিস্ট্রারারে কাছে বার বার এডেনডেন্ট রেজিস্টার চেয়েও না পেয়ে তাকে বহিস্কাররে সিদ্ধান্ত নেন তিনি। যদিও এই বহিষ্কারকে অনৈতিক বলে দাবি করে উপাচার্যকে অপসারনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষক কর্মীদের একাংশ। এর মধ্যে একাধিকবার বিশ্বিবিদ্যালয়ে ঢোকার চেষ্টা করেও আন্দোলনকারীদের চাপে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে পারেননি উপাচার্য। অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা কাটাতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি । বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পড়াশোনা বিঘ্নিত করে এই আন্দোলন করা যাবে না ও উপাচার্যকেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে দিতে হবে বলে নির্দেশ দেয় কোর্ট। তা সত্ত্বেও আন্দোলন থামেনি। অবশেষে শুক্রবার কোর্টের নির্দেশ মতো এদিনে কড়া পুলিশি পাহারায় বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের চেম্বারে প্রবেশ করেন উপাচার্য। যদিও আন্দোলনকারীরা সমানে তাকে দেখা মাত্রই গো ব্যাক স্লোগান দিতে থাকেন।
অন্যদিকে সম্প্রতি রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্য়ালয়ের আচার্য সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করেছিলেন আন্দোলনকারীরা। এরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে কোর্ট মিটিং ডাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। এই রেজিস্ট্রারকেই অনৈতিকভাবে বরখাস্তের অভিযোগ তুলেছিলেন আন্দোলনকারীরা। এমনকী রেজিস্ট্রারকে ক্যাম্পাসে ঢোকার অনুমতি পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। এই ঘটনাকে সামনে রেখেই প্রথম প্রতিবাদের স্ফুলিঙ্গ দেখা গিয়েছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। এদিকে বরখাস্ত হওয়া রেজিস্ট্রারকেই আচার্য কোর্ট মিটিং ডাকার নির্দেশ দেন। যা নিয়ে আন্দোলনকারীরা কার্যত নৈতিক জয়ের আভাস পান। আর এইসব বিতর্কের মধ্যেই এদিন প্রায় দেড় মাস পার করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকলেন উপাচার্য।
অন্যদিকে উপাচার্য জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অচলাবস্থা কাটাতে ও শান্তির পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে আগামী বুধবার আন্দোলকারীদের সঙ্গে তিনি আলোচনায় বসবেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন শীঘ্রই বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অচলাবস্থা কেটে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।