সন্তোষ মণ্ডল,আসানসোলঃ– ক্রেডিট কার্ডের নাম করে ব্যাংক অ্য়াকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চক্রের হদিশ। তদন্তে নেমে ওই চক্রের তিন জনকে গ্রেফতার করল আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের সাইবার থানার পুলিশ। ধৃতদের কাছ থেকে ছ’টি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়।
বুধবার আসানসোলে জিটি রোডের ভগৎ সিং মোড়ে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের সাইবার থানায় এক সাংবাদিক সম্মেলন করে ঘটনা প্রসঙ্গে জানান ডিসিপি ( হেডকোয়ার্টার) ডঃ অরবিন্দ আনন্দ। তিনি জানান মঙ্গলবার হিরাপুর থানার বার্নপুরের রহমতনগরের একটি বাড়ি থেকে ওই সাইবার জালিয়াতি চক্রের তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের নাম আলিম আনসারি, আবু হাসান ও আরশাদ আনসারি। তার মধ্যে প্রথম দুজন ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া ও অন্যজন ধানবাদের বাসিন্দা। রহমতনগরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে জাল সাইবার চক্র চালাত তিনজন।
এরপর ডিসিপি আনন্দ জানান কীভাবে সাইবার জালিয়াতির ফাঁদ পেতে টাকা হাতাত চক্রটি। ওই তিনজন ক্রেডিট কার্ড তৈরি করে দেওয়ার নাম করে ফেসবুকের মাধ্যমে মানুষদেরকে ফাঁদে ফেলতো। প্রতারকরা ব্যাবসায়ীদের একটি গ্রুপের থেকে তথ্য নিয়ে প্রতারণা করত। যেখানে নথিভুক্ত সকল ব্যাবসায়ীদের যাবতীয় নথি দেওয়া থাকে। প্রতারকরা কোনভাবে সেই গ্রুপ থেকে বিভিন্ন ব্যাবসায়ীদের ফোন নম্বর সহ বিভিন্ন তথ্য নিয়ে ব্যাবসায়ীদের ক্রেডিট কার্ডের লোভনীয় অফার বা ক্রেডিট কার্ডের সময়সীমা শেষ হয়ে গেছে বলে অবিলম্বে সেটা রিনিউ করার আকর্ষণীয় অফার দিত। এবং ব্যাবসায়ীদের দেওয়া ব্যাংকের তথ্য সংগ্রহ করে সেখান থেকে অ্যাকাউন্ট নম্বর সহ ওটিপি সংগ্রহ করে গুগুল অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করে নিত।
বুধবার ধৃতদের আসানসোল আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ। ধৃতের জিজ্ঞাসাবাদ করে এই চক্রের সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত রয়েছে কিনা জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, এই তিন অভিযুক্ত গত ৩ মাস ধরে এই চক্রটি চালাচ্ছিল। রহমত নগর এলাকার কেউ এর সঙ্গে জড়িত আছে কি না তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
অন্যদিকে এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে ডিসিপি (হেডকোয়ার্টার) সাইবার জালিয়াতি বা প্রতারণার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের সচেতনতার জন্য একটি হেল্পলাইন নম্বর ১৯৩০ উল্লেখ করে জানান কেউ সাইবার অপরাধের শিকার হলে এই নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন। এদিনের বৈঠকে ডিসিপি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (ডিডি) মীর শহিদুল আলি, এসিপি (সেন্ট্রাল) বিশ্বজিৎ নস্কর, আসানসোল সাইবার থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় ও অন্য পুলিশ আধিকারিকরা।