সংবাদদাতা,বাঁকুড়াঃ- দীর্ঘ দিন ধরে গ্রাম সংলগ্ন সেতু নির্মাণের দাবি থাকলেও গ্রামবাসীদের সেই দাবি নিয়ে হেলদোল দেখায়নি প্রশাসন থেকে কোনো রাজনৈতিক দল। অগত্যা গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলকে শিক্ষা দিতে নিজেরাই নির্দল প্রার্থী চয়ন করে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় তাকে জিতিয়ে এনেছিলেন গ্রামের মানুষ। কিন্তু ভোট মিটতেই সেই নির্দল প্রার্থী ভিড়লেন শাসক দলে।
বাঁকুড়ার ছাতনা ব্লকের ধবন গ্রাম পঞ্চায়েতের জামথোল গ্রাম। গ্রামে একশো শতাংশ আদিবাসী মানুষের বসবাস। গ্রামে যাওয়ার একমাত্র রাস্তায় পড়ে একটি ছোট নদী। বহুকাল আগে সেই নদীর উপর কজওয়ে তৈরী হলেও দীর্ঘদিন ধরে তা বেহাল। বারেবারে গ্রামের মানুষ ওই নদীর উপর সেতু নির্মাণের আবেদন নিয়ে প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দরজায় দরজায় ঘুরেছেন। কিন্তু হাল বদলায়নি সেতুর। প্রতিবাদে গত বিধানসভা নির্বাচনে ভোট বয়কট করেও কোনো লাভ হয়নি। তাই এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলকে শিক্ষা দিতে গ্রামবাসীরা নিজেরাই আলোচনা করে স্থানীয় শিক্ষক অভিজিৎ মুর্মুকে নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন করেন। নির্দল প্রার্থীকে সমর্থন করে গ্রামের তরফে কেউ অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী না হওয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় জয়ী হন নির্দল প্রার্থী। কিন্তু ভোট মিটতেই ঘটে গেল উলট পুরাণ। গতকাল বাঁকুড়ার তৃণমূল ভবনে নির্দল হিসাবে জয়ী প্রার্থী অভিজিৎ মুর্মু যোগ দেন শাসক দল তৃণমূলে। যোগদানের কারণ হিসাবে অভিজিৎবাবুর যুক্তি আগামী পাঁচ বছর এলাকার উন্নয়নের ক্ষমতা থাকবে শাসক দলের হাতেই। তাই শাসক দলের সাথে থাকলেই তাদের দাবী পূরণ হবে, এটা বুঝতে পেরেই গ্রামের মানুষের মতামত নিয়ে তিনি শাসক দলে যোগ দিয়েছেন। একই যুক্তি সাজিয়েছেন শাসক দলের নেতৃত্বও। তাদেরও দাবী উন্নয়নের জোয়ারে সামিল হতেই এই যোগদান। যদিও বিরোধীদের দাবী শাসক বিরোধী আন্দোলনের মুখ হিসাবেই অভিজিৎ মুর্মুকে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় জয়ী করেছিলেন গ্রামের মানুষ। কিন্তু তিনি শাসক দলে যোগ দেওয়ায় তা গ্রামের মানুষের সাথে প্রতারণারই সামিল হল।