সংবাদদাতা, বর্ধমান: জবরদস্তি উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে পাল পাল মেয়েকে যৌনদাসী বানানোর চক্র ফাঁস করলো বর্ধমান পুলিস। আটজন আটকে রাখা এরকম যৌনদাসীকে উদ্ধারের পাশাপাশি ধরাও হয়েছে এক হোটেল ম্যানেজারকে। যা নিয়ে দারুন শোরগোল বর্ধমান শহর জুড়ে।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বুধবার বর্ধমানের ফাগুপুরের একটি হোটেল থেকে পুলিশ উদ্ধার করল ৮ জন মহিলাকে। ধৃত হোটেল ম্যানেজার বর্ধমান শহরের ৪নং ওয়ার্ডের তৃণমূলের একজন নেতার ভাই বলেও জানা গেছে। ধৃত ম্যানেজারের নাম প্রশান্ত মাল। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পূর্ব বর্ধমানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্ক ব্যানার্জ্জী জানিয়েছেন, গতকাল পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ একটি সুনির্দিষ্ট ইনফরমেশন পায়। তার উপর পদক্ষেপ গ্রহণ করা শুরু হয়। জানতে পারা যায় কোনও একজন মহিলাকে দিয়ে ফাগুপুরের কাছে একটি হোটেলে জোড় করে যৌন পেশা চালানো হচ্ছে। সেই তথ্য অনুযায়ী ডিএসপি হেডকোয়ার্টার অতনু ঘোষাল একটি স্পেশাল টিম তৈরি করেন। তাঁরা সেই হোটেলে হানা দেন। ৮ মহিলা উদ্ধার হয়েছে। তারমধ্যে ১ জন নাবালিকা। হোটেল ম্যানেজার প্রশান্ত মালকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইমমোরাল ট্রাফিক প্রিভেনশন এবং পকসো আইনে মামলা শুরু করা হয়েছে। কিছু সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। হোটেলের লাইসেন্স বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যাদের উদ্ধার করা হয়েছে তাঁরা বেশ কয়েকদিন এখানে ছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এই মহিলারা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা এবং অন্য রাজ্যের। ধৃতকে বৃহস্পতিবার আদালতে তুলে ৭ দিন হেপাজতে চাওয়া হয়েছিল, ৪ দিন পুলিশ হেপাজত পাওয়া গেছে। এদিকে, ধৃত হোটেল ম্যানজার প্রশান্ত মালকে গ্রেপ্তার করতেই সুর চড়িয়েছে বিজেপি। বিজেপির এক জেলা নেতা জানিয়েছেন, ধৃত প্রশান্ত মালের দাদা বর্ধমান পুরসভার ৪নং ওয়ার্ডের ২৭নং বুথ কমিটির নেতা। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে গোটা পশ্চিমবাংলায় কি অরাজকতা চলছে। ওই বিজেপি নেতা জানিয়েছেন, ২১ জুলাইয়ের সভায় খোদ তৃণমূলের সুপ্রিমো নির্দেশ দিয়েছেন, মহিলাদের সম্মান জানানোর জন্য। আর তারপরেই তৃণমূল নেতার ভাইয়ের মহিলাদের নিয়ে এই কারবারের ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল তৃণমূল দলে কি চলছে।
মাত্র মাসখানেক আগেই শহরের তিনকোনিয়া এলাকায় ঘণ্টা পিছু ঘর ভাড়া দেওয়া একটি হোটেল থেকে দরজা ভেঙে এক মহিলার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই মহিলাকে নকল স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ওই হোটেলে নিয়ে তোলে শহর লাগোয়া খাগড়াগড় এলাকার এক যুবক l এক ঘন্টা পর রুম ছাড়তে ডাক দিতে গিয়ে হোটেলের বয় দেখে বছর ৪০ এর মহিলাকে খুন করে ইতিমধ্যেই চম্পট দিয়েছে যুবক। ধরা হয়েছিল ওই হোটেলের মানেগেরকেও। হত্যাকারী পরের সপ্তাহে ধরা পড়ে দিঘার সমুদ্র সৈকত থেকে।