eaibanglai
Homeএই বাংলায়নেশার তাগিদে একশো বছরেরও বেশি সময় ধরে যাত্রা শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছে এই...

নেশার তাগিদে একশো বছরেরও বেশি সময় ধরে যাত্রা শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছে এই গ্রাম

সংবাদদাতা,বাঁকুড়াঃ– পেশা নয় নেশা, তাই আজও বাংলার প্রচীন সংস্কৃতি যাত্রা শিল্পকে নিজেদের গাঁটের কড়ি খরচ করে বাঁচয়ে রেখেছেন বাঁকুড়ার তালডাংরার কেশাতড়া গ্রামের মানুষ। প্রসঙ্গত এই গ্রামের যাত্রা শিল্পের ইতিহাস একশো বছরেরও বেশি পুরানো। হ্যাজাক লাইট জ্বেলে যাত্রা মঞ্চস্থ করা থেকে বর্তমানে বৈদ্যুতিক জেনারেটের সাহায্য নিয়ে ঝলমলে আলোর ব্যবহার সবকিছুরই সাক্ষী এই গ্রাম। একশো বছরেরও বেশি আগে মনসা যাত্রা, কৃষ্ণ যাত্রা, বালিকা সঙ্গীত দিয়ে শুরু হয়ে পরবর্ত্তী সময়ে একের পর এক যাত্রাপালা মঞ্চস্থ করতে থাকে গ্রামের মানুষ। যা অনেক সময় পেশাদারি শিল্পীদেরও হার মানিয়েছে, এমনটাই দাবি গ্রামবাসীদের। তাই এই যাত্রার নেশার তাগিদে সময় আর অর্থ ব্যায় করে এখনো গ্রামীণ এই ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছেন ভীমাড়া-কেশাতড়া গ্রামের ডাঃ তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রতাপ পতি, বিকাশ চন্দ, প্রদীপ সৎপতি, সুজিত সৎপতি, সুব্রত পতি, নিত্যানন্দ পতি, স্বপন দাস, উজ্জ্বল মিশ্র, অর্ধেন্দু পতি, সতীশ বারিক, সঞ্জীব বারিক, লক্ষীকান্ত দত্ত ও তাদের সহযোগীরা।

কেউ বেসরকারী সংস্থার কর্মী, কেউ ব্যবসায়ী, কেউ সিভিক ভল্যান্টিয়ার, কেউ গ্রামীণ চিকিৎসক আবার কেউ নিজের জমিতে চাষাবাদ করেই সংসার চালান। আর ওই মানুষ গুলিই পেশা ভুলে যাত্রার নেশায় একরাতের জন্য হয়ে ওঠেন পতিতালয়ের মস্তান, পাথর কারখানার শ্রমিক, ব্যবসায়ী কিম্বা ডাঁকসাইটে পুলিশ অফিসার। আর এভাবেই নিজেদের গাঁটের কড়ি খরচ করে গ্রামীণ যাত্রা শিল্পকে আজও টিকিয়ে রেখেছেন এই গ্রামের মানুষ।

চলতি বছরে কেশাতড়া গ্রাম ষোলো আনার প্রযোজনায় দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে মঞ্চস্থ করে বিশিষ্ট নাট্যকার উৎপল রায়ের লেখা ‘মেনকা মাথায় দে লো ঘোমটা’। আর এই যাত্রানুষ্ঠান ঘিরে এলাকার মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যায়। হাজারেরও বেশি দর্শকের উপস্থিতিই প্রমাণ করে বাংলার এই প্রাচীন সংস্কৃতি নিয়ে এখানকার মানুষের উন্মাদনা এখনো বিন্দুমাত্র কমেনি।

‘মেনকা মাথায় দে লো’ ঘোমটা পালায় বিশেষ চরিত্রে অভিনয়কারী প্রতাপ পতি, বিকাশ চন্দরা বলেন, “আমাদের গ্রামের সবচেয়ে বড় পরিচয় আমরা সবাই যাত্রা পাগল। গ্রামের ঐতিহ্যকে ধরে রাখাই আমাদের এক ও একমাত্র লক্ষ্য।” আর সেই লক্ষ্যেই তাঁরা এগিয়ে চলেছেন বলে জানান।

গ্রামের বিশিষ্ট যাত্রা শিল্পী ডাঃ তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ভীমাড়া-কেশাতড়া গ্রামের যাত্রা শিল্পের ইতিহাস একশো বছরেরও বেশি পুরানো। নানান ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যেও তাঁরা এগিয়ে নিয়ে চলেছেন বাংলার এই প্রচীন শিল্পকে। আগামী প্রজন্মও এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে বলেই আশাবাদী তিনি ।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments