সন্তোষ মণ্ডল,আসানসোলঃ– পনের দাবিতে এর গৃহবধূকে খুনের অভিযোগে স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির ৫ জনকে আটক করল পুলিশ। ঘটনা আসানসোলের হীরাপুর থানার বার্নপুরের নিউটাউন ছোটদিঘারী এলাকার। মৃত গৃহবধূর নাম পিয়ালি মাজি (২৪)। তার ৪ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। সোমবার রাতে শ্বশুরবাড়ি থেকে ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।
মৃতার ৪ বছরের কন্যা সন্তান জানিয়েছে সোমবার সন্ধ্যায় তাকে পড়াচ্ছিল তার মা। সেই সময় তার বাবা মাকে ডেকে নিয়ে যায় ও মারধর করে ও পরে রাতের দিকে মায়ের দেহ উদ্ধার হয়। মৃতার কন্যা সন্তান মঙ্গলবার দুপুরে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দিও দেয়।
জানা গেছে, বছর পাঁচেক আগে আসানসোলের বারাবনি থানার পানুরিয়ার বাসিন্দা পিয়ালি মাজির সঙ্গে হীরাপুর থানার বার্নপুরের নিউটাউন ছোটদিঘারীর বাসিন্দা সেইল আইএসপি বা ইস্কো কারখানার কর্মী সুমন মাজির বিয়ে হয়। মৃতার বাবা বিশ্বনাথ মাজি জানান বিয়ের সময় তিনি পন হিসাবে নগদ আড়াই লক্ষ টাকা, একটি স্কুটি, সোনার গয়না সহ অন্যান্য জিনিস দিয়েছিলেন। কিন্তু বিয়ের মাস কয়েক পর থেকেই আরো ৫ লক্ষ টাকা পনের দাবিতে তার উপর উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার শুরু করে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। কন্যা সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর সেই অত্যাচার আরো বেড়ে যায়।
এরমধ্যে দুর্গাপুজোর অষ্টমীর দিন স্ত্রী পিয়ালি ও ৪ বছরের মেয়ে দিশাকে বাপের বাড়িতে রেখে আসেন সুমন মাজি। গত শুক্রবার আবার তাদের শ্বশুরবাড়িতে ফিরিয়ে আনেন। সোমবার রাত সাড়ে নটা নাগাদ মৃতার বাবা বিশ্বনাথ মাজি তার শ্যালকের কাছ থেকে খবর পান যে, তার মেয়ে কুয়োয় ঝাঁপ দিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি কয়েকজনকে নিয়ে মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন মেয়েকে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হচ্ছে। তিনি মেয়েকে নিয়ে আসানসোল জেলা হাসপাতালে যান কিন্তু সেখানে এমারজেন্সি বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। হাসপাতালের তরফে বলা হয় পিয়ালি মাজির শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে। বিশ্বনাথ মাজি অভিযোগ করেন তার মেয়েকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে খুন করেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
অন্যদিকে মঙ্গলবারই ঘটনার তদন্তে নেমে মৃতার স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির ৫ জনকে গ্রেফতার করে হীরাপুর থানার পুলিশ।