সঙ্গীতা চৌধুরীঃ- আগামী ১০ই নভেম্বর ২০২৩ হলো ধনতেরাস। ধনতেরাস বা ধনত্রয়োদশী সম্পর্কে নানান রকম কথা প্রচলিত আছে। অনেকেই মনে করেন ধনতেরাসে সমর্থ্য অনুযায়ী সোনার গহনা কেনা সংসারের জন্য ভালো, অনেকে আবার এইদিন চাঁদি,পিতলও,বাসন কিনে থাকেন। অনেকে আবার ধনতেরাসের দিন ঝাঁটাও কিনে থাকেন। কিন্তু ধনতেরাসের দিন এই বাসন কেনার বা ঝাঁটা কেনার সত্যি কি কোন যৌক্তিকতা আছে? এই প্রসঙ্গে স্বামী পরমাত্মানন্দ জি মহারাজ বলেছেন যে, ধনতেরাসের দিন বাসন কেনার বা ঝাঁটা কেনার কোন যৌক্তিকতা নেই।
স্বামী পরমাত্মানন্দজি মহারাজের কথায়, “ধনতেরাসের দিন যারা মনে করেন যে সামর্থ্যমতো গয়নাগাটি কিনতে হবে, কিংবা যারা মনে করেন দশকর্মার দোকান থেকে গুচ্ছের ঝাঁটা কিনে নিয়ে আসতে হবে, আমি বলবো শাস্ত্রীয় ভাবে এর কিন্তু কোনো ভিত্তি নেই। এই ঝাঁটাটা যে কোথা থেকে এসে হাজির হলো এটা কার উর্বর মস্তিষ্কপ্রসূত, তা আমার জানা নেই, পৌরাণিকভাবে এর কোনো রেফারেন্স আমরা পাই না।”
ধনতেরাস আসলে কীভাবে উদযাপন করা উচিত সেই প্রসঙ্গে স্বামী পরমাত্মনন্দ জি মহারাজ বলেন,“ধনতেরাস আসলে ধনত্রয়োদশী , এই ধনত্রয়োদশী হচ্ছে ধন্বন্তরি দেবীর আবির্ভাব উৎসব। যখন সমুদ্রমন্থন করা হয়েছিলো তখন বৈদ্যবেশে হাজির হয়েছিলেন ধন্বন্তরি, তিনি সমস্ত চিকিৎসক কুলের আদি চিকিৎসক, ধন্বন্তরির হাতেই ছিল অমৃতকুম্ভ, কোথাও বোধহয় আমাদের একটা ধারণা থাকে, আমরা সারা জীবন বেঁচে থাকবো এবং সুস্থ থাকবো আর সেখানেই ধন্বন্তরি যুক্ত হয়ে যায় অমৃতকুম্ভ হস্ত ধন্বন্তরির সঙ্গে। এই ধারণায় পরবর্তীকালে বদলে গেলো, আমরা দীর্ঘ জীবনের জন্য ধন্বন্তরির জন্মের জন্য যে আনন্দ উৎসব করা উচিত সেটা ভুলে গেলাম আমরা সোনার স্তুপ,ধনরাশির স্তুপ তৈরি করতে শুরু করলাম আর সেখান থেকেই কোথাও হয়তো সোনা কেনা, রূপো কেনা, বাসন কেনা, ঝাঁটা কেনা এইসব উঠে এলো।
ধন্বন্তরির জন্মদিন হিসেবে এই ধনতেরাসকে পালন করুন, সুস্থ থাকুন সমাজ ও সংসারকে সুস্থ রাখুন এবং আমাদের পৌরাণিক পরম্পরাকে রক্ষা করার জন্য সচেষ্ট হন।”