নিজস্ব সংবাদদাতা, পাণ্ডবেশ্বরঃ– একদিকে যখন বাড়ির কুয়ো থেকে উদ্ধার হল নিখোঁজ শিশু কন্যার দেহ, অন্যদিকে বাড়ির বাইরে রাস্তায় তখন ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে টাকা। এমনই রহস্যজন ঘটনায় তোলপার দুর্গাপুর মহকুমার পাণ্ডবেশ্বর ব্লকের কেন্দা গ্রাম। পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পাণ্ডবেশ্বর থানার পুলিশ।
গতকাল রাতে কেন্দা গ্রামের উত্তরপাড়ার বাসিন্দা পেশায় পোষ্ট অফিসের এজেন্ট বাপী গোস্বামীর মেয়ে ছয় বছরের মিষ্টির দেহ উদ্ধার হয় বাড়িরই কুয়ো থেকে। আর এই ঘটনাকে ঘিরে একদিকে যেমন রহস্য দানা বেঁধেছে তেমনই উঠছে নানা প্রশ্ন।
বাপীবাবুর দাবি গতকাল রাতে তিনি বাড়ি ছিলেন না, বালিজুরি গ্রামে কালীপুজোর বিসর্জনে গিয়েছিলেন । বাড়িতে সেই তার স্ত্রী, ছয় বছরের কন্যা ও বৃদ্ধ বাবা মা ছিলেন। বিসর্জন থেকে ফেরার পথে তিনি জানতে পারেন তার বাড়িতে চুরি হয়েছে এবং তার মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বাড়িতে ফিরে তিনি দেখেন সব জিনিসপত্র ওলোট-পালোট অবস্থায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে । আলমারি থেকে গ্রাহকদের পাশ বই টাকা সব লোপাট। বাড়ির সামনে পাস বই টাকার বান্ডিল পড়ে রয়েছে। এরপর মেয়ের খোঁজ করতে গিয়ে বাড়ির উঠোনের কুয়োয় তার দেহ ভাসতে দেখা যায়।
অন্যদিকে বাপীবাবুর স্ত্রী জানান, রাতের খাবার খেয়ে তিনি তার মেয়ে ও শ্বশুর শাশুড়ি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। হঠাৎ ঘুম ভেঙে যাওয়ায় লক্ষ্য করেন পাশে মেয়ে নেই। মেয়ের খোঁজ করতে গিয়ে দেখেন বাড়ির সব জিনিস পত্র ছড়ানো ছিটানো, আলমারি খোলা। বাপীবাবুর স্ত্রী দাবি চোরেরা চুরি করতে এসে তার মেয়েকে খুন করেছে। তার মতে চোরদের মধ্যে কাউকে তার মেয়ে চিনতে পেরেছিল তাই তাকে কুয়োয় ফেলে পালায় চোরের দল।
যদিও এই ঘটনাকে ঘিরে নানা প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে স্থানীয়দের মনে। চোরের দল এসে লুঠপাট চালালেও বাড়ির কেউ টের পেল না অথচ ছয় বছরের ছোট মেয়ে কীভাবে তা টের পেল? শিশুকন্যাকে কুয়োয় ফেলে দেওয়া হল অথচ সে কেন চিৎকার করল না? শিশু কন্যার ঘুম ভেঙে গেলে সে তার মাকে কেন ডাকলো না ? বাড়ির সামনে রাস্তাতে চোরের টাকা ছড়িয়ে রেখে গেল কেন?
অন্যদিকে রাতেই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পাণ্ডবেশ্বর থানার পুলিশ, দমকল ও এলাকার বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী । কুয়ো থেকে শিশু কন্যার দেহ উদ্ধার করা হয়। বিধায়ক বলেন, “খুবই দুঃখজনক ঘটনা। পুলিশকে বলেছি দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের গ্রেফতার করতে।” সব দিক খতিয়ে দেখে পুলিশ পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গেছে।