নীহারিকা মুখার্জ্জী,দক্ষিণ চব্বিশ পরগণাঃ- আবার সমাজের কাছে দৃষ্টান্ত স্থাপন করল বিখ্যাত বিজ্ঞানী আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসুর স্মৃতিধন্য দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার ফলতা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়। সৌজন্যে লিপিকা করণ, ধরিত্রী পুরকাইত, সবিতা মিস্ত্রী, মণিশ চক্রবর্তী, শুভাশিস হালদার, কুন্তল মণ্ডল, মৌসুমী প্রামাণিক, জয়দেব নস্করের মত বিদ্যালয়ের ছাত্রদরদী শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং তিলক নস্করের মত প্রধান শিক্ষক। ছাত্রছাত্রীদের মনস্তত্ত্ব এরা ভালভাবেই বুঝতে পারেন। তাইতো তাদের অবচেতন মনের সুপ্ত ইচ্ছে বারবার পূরণ হয় এবং ভাইফোঁটার দিন তার ব্যতিক্রম ঘটলনা।
বিদ্যালয়টিতে প্রায় সাড়ে চার শতাধিক ছাত্রছাত্রী আছে। এদের অধিকাংশ খুবই গরীব ঘরের। ভাইফোঁটার দিন অন্যরা যখন আনন্দ করে বিষণ্নতা তখন এদের গ্রাস করে। তাদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ওদের পাশে এসে দাঁড়ান।
গত ১৬ ই নভেম্বর ছিল ভাইফোঁটা। বিগত বছরের মত এই বছরও ফলতা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উদ্যোগে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে মহাসমারোহে পালন করা হয় ভাইফোঁটা উৎসব।
সহপাঠী দাদা ও ভাইদের মঙ্গল কামনা করে প্রতিটি ছাত্রী প্রতিটি ছাত্রের কপালে চন্দনের ফোঁটা দেয়। রীতি মেনে মাথায় দেওয়া হয় ধান ও দূর্বা। এমনকি সবাইকে মিষ্টি খাওয়ানো হয়। একে অপরের হাতে তুলে দেয় বোর্ড, রঙ-তুলি, বর্ণপরিচয় প্রথম ভাগ ও বর্ণপরিচয় দ্বিতীয় ভাগ। মধ্যাহ্ন ভোজনেরও আয়োজন করা হয়। তখন প্রতিটি শিশুর মুখে ঝরে পড়ে হাসি।
কথা হচ্ছিল স্থানীয় বিধায়ক শঙ্কর কুমার নস্করের সঙ্গে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সহ প্রতিটি শিক্ষক-শিক্ষিকার এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বললেন- ফলতা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয় আমাদের এলাকার গর্ব। আমার স্থির বিশ্বাস এই বিদ্যালয়টি একদিন রাজ্যের সেরা বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি পাবে।
প্রধান শিক্ষক তিলক নস্কর বললেন – আমাদের বিদ্যালয়ের অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী গরীব, সাধারণ ঘরের ছেলেমেয়ে। নিজ নিজ জন্মদিন, ভাইফোঁটার মত উৎসবে তাদের যাতে মনঃকষ্ট নাহয় তার জন্য আমরা এগুলির আয়োজন করে থাকি। দিনের শেষে ওদের মুখের হাসি আমাদের বড় প্রাপ্য।