সঙ্গীতা চৌধুরীঃ- আমরা সাংসারিক জীবনের মানুষেরা প্রতিদিন নানান রকম অশান্তির মধ্যে দিয়ে জীবন কাটায়, এখন এই অশান্তির মধ্যে থেকে শান্তি লাভ করতে গেলে আমাদের ঈশ্বরের সমর্পণ করতে হবে, গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ থেকে শুরু করে রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব পর্যন্ত এই কথাই বলে গেছেন, কিন্তু আমরা তো সন্ন্যাসী নই, আমরা কীভাবে আমাদের যাবতীয় চিন্তা চেতনা সবকিছু ঈশ্বরের পায়ে সমর্পণ করবো এই প্রশ্ন আমাদের মনে আসাটা স্বাভাবিক। একবার এই রকমই প্রশ্ন এক ভক্ত করেছিলেন স্বামী সোমেশ্বরানন্দ মহারাজ কে। তার উত্তরে কী বলেছিলেন মহারাজ জানেন?
একবার একজন প্রশ্ন করেছিলেন যে, “ঈশ্বরে সমর্পণ অভ্যাস করব কীভাবে? এর কি কোন পদ্ধতি রয়েছে ?” স্বামী সোমেশ্বরানন্দ মহারাজ এই প্রশ্নের উত্তর প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে, “সমর্পণ হলো ভক্তিপথে কর্মযোগ সাধনা। নিজের কর্তব্য করে যান কিন্তু ফল বা পরিণাম ছেড়ে দিন ঈশ্বরের উপর। তিনি যদি আপনার প্রত্যাশার অনুরূপ ফল না দেন তবে দুঃখ বা হতাশা আসতে দেবেন না আপনার মনে। কখনো বিপদ এলে সর্বশক্তি দিয়ে তার সমাধানের চেষ্টা করুন কিন্তু ব্যর্থ হলেও তাকে ঈশ্বরের আশীর্বাদ বলে গ্রহণ করতে পারেন? অন্তত চেষ্টা করে দেখুন। দৈনন্দিন ছোট-ছোট কাজে পরীক্ষা করুন। রান্নার সময় ভুল করে বেশি নুন হয়ে গেছে। রাগ কিংবা হা-হুতাশ না করে শান্ত মনে শুধরে নিতে পারেন? বাসে উঠে চেষ্টা করেও বসার সীট না পেলে আনন্দিত মনে (মুখ ব্যাজার বা দুঃখ না করে) দাঁড়িয়ে থাকুন। দোকানে গিয়ে হঠাৎ দেখলেন যে আপনার মানিব্যাগ চুরি হয়ে গেছে । খুঁজুন। থানায় গিয়ে রিপোর্ট লেখান। কিন্তু মনে কোনো দুঃখ বা হতাশা আনবেন না। সন্ধ্যায় জপ-ধ্যানে মন বসছে না? নিজের কর্তব্য করে যান, আর মনে মনে ভাবুন যে ঠাকুর যা চান তাই হোক, মন শান্ত হবে কিনা সেটা তাঁর উপর ছেড়ে দিন, করে দিন সমর্পণ। এভাবে নানাভাবে সমর্পণ অভ্যাস করুন রোজ কিছুটা সময়। পরীক্ষা করে দেখুন ১৫-২০ দিন।”