সঙ্গীতা চৌধুরী,হুগলিঃ- পশ্চিমবঙ্গের প্রাচীন গির্জা গুলির মধ্যে অন্যতম একটি হলো ব্যান্ডেল গির্জা। ১৫৩৬ সালে পর্তুগিজরা সপ্তগ্রামে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে আসে ও সেখানেই তারা থাকতে শুরু করে,১৫৯৯ সালে ব্যান্ডেলে এবার ছোট একটি গির্জা তৈরি হয়। সেখানে গির্জার মধ্যে সকল ধর্মীয় কাজকর্ম করার জন্য গোয়া থেকে অগস্টিন ফাদারদের নিয়ে আসা হয়, এরপর ১৬৩২ সালে মোগল সম্রাট শাহজাহানদের সৈন্যদের সাথে পর্তুগিজদের যুদ্ধ হয় ও গোপন সৈন্যরা ব্যান্ডেল ধ্বংস করে, এরপর শাজাহান গির্জা তৈরীর অর্থ দান ও জমি দান করেন, সেই জমিতেই পরে গির্জা তৈরি হয়। ব্যান্ডেল গির্জার এই ইতিকথা শুরু থেকেই আপনাদের বলবো।
পর্তুগিজরা চুঁচুড়া সমৃদ্ধ বাণিজ্য নগরী ও সেনানিবাস গড়ে তোলে ১৫৯৯ খ্রিস্টাব্দে পর্তুগিজদের আমন্ত্রনে গোয়ার অগাস্টিয়ান পুরোহিতগণ ব্যান্ডেলে এসে গির্জা ও মঠ তৈরি করলেন । পরে মোগল অবরোধে এই গির্জা ধ্বংস হয় এবং ফাদার জোয়ান দা কুশো ছাড়া অপর চারজন পুরোহিত নিহত হন। মাতা মারীয়ার একান্ত অনুরাগী দিয়াগো শুভ জলযাত্রার প্রতীক মায়ের মূর্তিটি নিরাপদ স্থানান্তরের হেতু হুগলি নদী পাড়ি দিলেন কিন্তু শত্রুর মৃত্যু বানে বৃদ্ধ হয়ে মন্ত্রিসহ নদী গর্ভে তলিয়ে গেলেন তখন ১৬৩২ খ্রিস্টাব্দ। বন্দি ফাদার জোয়ান দা ক্রুশাসহ কয়েক হাজার খ্রিস্ট ভক্তদের মোগলরা আগ্রায় নির্বাচিত করে দলিত হয়ে তাদের মৃত্যুদণ্ড আদেশ দিলেন সম্রাট শাহজাহান কিন্তু একটা হাতিই ফাদার জোয়ানকে পিঠে বসিয়ে সম্রাটের সামনে মার্জনা ভিক্ষার ভঙ্গিতে জানুপাত করলো, সপরিষদ সম্রাট এ অদ্ভুত দৃশ্যে গভীর অভিভূত হলেন এবং সকল খৃষ্ট ভক্তদের মুক্তি দিলেন। ১৬৩৩ খ্রিস্টাব্দে ফাদার জোয়ান ডা ক্রশো সহ খৃষ্টভক্তগন ব্যান্ডেলে প্রত্যাবর্তন করেন। গীর্জা পুনর্গঠন এবং পুনর্বাসনের জন্য সম্রাট শাহজাহান অর্থ ও ৭৭৭ বিঘা জমি দান করলেন।