সঙ্গীতা চৌধুরী,হুগলিঃ- শাজাহানের দেওয়া জমিতে গড়ে উঠলো গীর্জা এরপর মাতা মারীয়ার প্রত্যাবর্তন হল ব্যান্ডেল গির্জায়, বলবো সেই লোমহর্ষক কাহিনী। এক গভীর রাতে ফাদার জোয়ান ডা ক্রুশো দেখলেন, নদীর জলে এক অদ্ভুত জ্যোতি আর ওখান থেকে ভেসে এলো বন্ধু তিয়াগোর কণ্ঠে ঘোষণা,“মাতা মারীয়া ফিরে আসছেন, তিনি মৃত্যুর কবল থেকে খ্রিস্টানদের রক্ষা করেছেন।” ফাদার জোয়ান ভাবলেন, স্বপ্ন কিন্তু সকাল হলেই এক দল জেলে গীর্জার প্রবেশদ্বারে মায়ের মূর্তিটি এনে ফাদারকে বললেন,“ গুরু, ‘মা’ ফিরে এসেছেন।” মাতা মারীয়ার মূর্তি প্রত্যাবর্তন উৎসব পালনের শেষে গীর্জার নিকট হুগলি নদীতে হঠাৎ এক পর্তুগিজ জাহাজের আগমন হয়। বঙ্গোপসাগরে প্রবল ঝড়ে জাহাজ ডুবির ভয়ানক বিপদ থেকে রক্ষা পেতে ক্যাপ্টেন ও নাবিকগণ মাস্তুলটি দান করার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, ব্যান্ডেল গির্জায় খ্রীষ্টযজ্ঞে অংশগ্রহণের পর ক্যাপ্টেন জাহাজের একটা মাস্তুল খুলে নিজেই গীর্জার সামনে সংবদ্ধ করলেন আজও মাস্তুলটি গীর্জার সামনে শোভা পাচ্ছে , মাস্তুল সহ যে পালগুলি দান করা হয়েছিলো, আজ পর্যন্ত সেগুলির সংরক্ষণ করে রাখা সম্ভব হয়নি।
প্রায় ৩০০ বছর ব্যান্ডেল গীর্জা গোয়া হতে আগত অগাস্টিয়ান পুরোহিতদের তত্ত্বাবধানে ছিল পরে জেসুইট সংঘের পুরোহিতগণ দায়িত্বভার পেয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি গড়ে তোলেন এরপর ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে সেন্ট জন স্কুল স্থাপিত হয় ও ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে সালেসীয় সংঘের উপর পরিচালন ভার ন্যস্ত হয়,১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে ডন বস্কো স্কুল ও সেমিনারি ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে অক্সিলিয়াম কনভেন্ট স্কুল ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে রিট্রিট হাউজ
ও সেমিনার হল এবং ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দে মাদার তেরেজা সমাজের কনভেন্ট প্রতিষ্ঠা হয়।
বর্তমানে গ্রানাইট মার্বেল পাথর বসিয়ে গীর্জার সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও মেরামতি করা হয়েছে গীর্জার বাইরেও ভিতরে প্রার্থনা উপাসনার জন্য কতগুলি স্থান বাড়ানো ও সুন্দর করা হয়েছে। কয়েক শতকের ঘাত প্রতিঘাতে বিচ্ছিন্ন খৃষ্ট সম্প্রদায়কে পুনর্গঠনের চেষ্টা চলছে ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে ২৫ শে নভেম্বর ব্যান্ডেল গির্জাকে মহামান্য পোপ দ্বিতীয় জনপল ব্যাসিলিকা সম্মানে ভূষিত করেন।