সন্তোষ মণ্ডল, আসানসোলঃ- রানিগঞ্জ থেকে উদ্ধার করে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেছিলো পুলিশ। প্রায় ১৫ দিন জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা হওয়ার পরে আপাততঃ সুস্থ হয়ে দূর্গাপুরে বাবামায়ের কাছে ফিরলো যুবতী রিঙ্কু মুদি। বৃহস্পতিবার দুপুরে আসানসোল জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ফিমেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে পুলিশের উপস্থিতিতে ঐ যুবতীকে দূর্গাপুরের রঘুনাথপুর ময়রাপাড়ার বাসিন্দা বাবা নবগোপাল মুদির হাতে তুলে দেন সহকারী সুপার সৃজিত মিত্র।
জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালেট ২১ ডিসেম্বর রানিগঞ্জ থানার পুলিশ বছর ২৪ এর এই যুবতীকে রানিগঞ্জ শহর থেকে উদ্ধার করে এমারজেন্সি বিভাগে নিয়ে আসে। তখন ঐ যুবতী শারীরিক অবস্থা ঠিক ছিলো না। সে, তার নাম ও বাড়ির ঠিকানা কিছুই বলতে পারেনি। সেই অবস্থায় তাকে ডাঃ সন্দীপ বেরার আন্ডারে ফিমেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তার কিছু শারীরিক সমস্যা ছিলো। এরই মধ্যে ঐ যুবতীর মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। ওয়ার্ডে সে অন্য রকম আচরণ করতে শুরু করে। অন্য রোগীদের জিনিসপত্র নষ্ট করার পাশাপাশি চিৎকার চেচামেচি করা শুরু। এরপর ডাঃ বেরা যুবতীর মানসিক অবস্থা ঠিক করতে জেলা হাসপাতালে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ চান। এই বিভাগের দুই চিকিৎসক ডাঃ ইন্দ্রনীল চৌধুরী ও ডাঃ সৌরভ চট্টোপাধ্যায় তার চিকিৎসা শুরু করেন। তাদের চিকিৎসায় ঐ যুবতী আস্তে আস্তে স্বাভাবিক ও সুস্থ হয়ে উঠতে থাকেন। বুধবার সহকারী সুপার সৃজিত মিত্র চিকিৎসক ও ওয়ার্ডের নার্স এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের কাছ থেকে জানতে পারেন যে, ঐ যুবতী অনেক কিছু বলতে পারছেন। সেই মতো সহকারী সুপার কথা বলে জানতে পারেন যে, যুবতী রিঙ্কু মুদি বিবাহিতা। তার বাপের বাড়ি দূর্গাপুরের রঘুনাথপুরের ময়রাপাড়ায়। শ্বশুর বাড়ি আসানসোলের হিরাপুর থানার ইসমাইলের কোড়া পাড়ায়। এরপর তিনি আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ মারফত বাবা নবগোপাল মুদি ও স্বামী কার্তিক দত্তর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বুধবার যুবতীর স্বামী জেলা হাসপাতালে এসে সহকারী সুপারের সঙ্গে কথা বলেন। তখন জানা যায়, তাদের বিয়ে কয়েক মাস হয়েছে। যুবতীর চিকিৎসার জন্য তার বাবামা তাকে চিকিৎসার জন্য বাপের বাড়ি নিয়ে যায় বেশ কিছু দিন আগে। সহকারী সুপারের কথা মতো বৃহস্পতিবার দুপুরে যুবতীর বাবা-মা ও স্বামী জেলা হাসপাতালে আসেন। নিয়ম মতো সব ডকুমেন্ট নিয়ে যুবতীকে বাবার হাতে তুলে দেওয়া হয়। স্বাভাবিক ভাবেই এতদিন পরে মেয়েকে পেয়ে খুশি নবগোপাল মুদি।
এই প্রসঙ্গে জেলা হাসপাতালের সুপার ডাঃ নিখিল চন্দ্র দাস বলেন, এদিন ঐ যুবতীকে তার বাবার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকেরা মত দিয়েছেন যে, তাকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া যেতে পারে।