সংবাদদাতা, বাঁকুড়াঃ- ১৯৮৬ সালে নির্মাণ হয় ডিভিসির মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। বর্তমানে সেই এই তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই পুকুর কে কেন্দ্র করে উঠেছে স্থানীয়দের একাধিক অভিযোগ। স্থানীয় লটিয়াবনী গ্রামের কোলে তৎকালীন সময় গড়ে ওঠে ডিভিসির এই মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। গ্রামের পাশেই নির্মাণ হয় ছাইপুকুর। ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে গিয়ে এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রতিদিন উৎপন্ন হয় টনটন ছাই। উৎপন্ন হওয়া সেই ছাই প্রতিনিয়ত পাইপ লাইনের মাধ্যমে জমা হয় ছাই পুকুরে। আর সেই ছাই-এ বেড়েছে মানুষের নরক যন্ত্রণা। তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কোলে থাকা এই গ্রাম আজ কার্যত ছাইয়ের তলায়। গ্রামের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে গবাদি পশু প্রত্যেকেই সমস্যার সম্মুখীন এই ছাই যন্ত্রণায়। গোটা গ্রামে মুহূর্তে মুহুর্তে উড়ে আসে আস্তরণ। আর সেই ছায়া আস্তরণ পড়ে রান্না করা খাবার এবং গ্রামের সর্বত্র জায়গায়। গ্রামের অধিকাংশ মানুষের বাড়ছে নানান অসুখ-বিসুখ। বিশেষ করে বাচ্চাদের চর্মরোগ এবং বয়স্কদের শ্বাস জনিত সমস্যায় ভুগছেন গ্রামের অধিকাংশ মানুষ। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়েও সেই একই যন্ত্রণার ছবি। অভিযোগ তবুও উদাসীন ডিভিসি কর্তৃপক্ষ।দীর্ঘদিন ধরেই ডিভিসি কর্তৃপক্ষের কাছে পুনর্বাসনের দাবি তুলেছিল এই গ্রাম। ২০০৮ থেকে বিভিন্ন সময় দফায় দফায় আন্দোলনের পরেও প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছুই দেয়নি ডিভিসি বলে অভিযোগ। অবশেষে আজ সাত সকাল থেকেই সেই ছায় পুকুরের ছায় পরিবহন বন্ধ করে বিক্ষোভে সামিল হলেন লটিয়াবনি গ্রামের অধিকাংশ মানুষ। অনির্দিষ্টকালের জন্য আজ থেকে বন্ধ রইলো ছাই পরিবহন। শুধুমাত্র ছাই পরিবহন বন্ধ না এর পাশাপাশি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের গেটের সামনে বিক্ষোভের স্বামী রয়েছেন প্রায় হাজারো ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক। কৃষকদের দাবি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের এই ছাই পুকুরের ছাই নষ্ট করে দিয়েছে এলাকার প্রায় ৮০০ একর কৃষি জমি। তৎকালীন সময় মুষ্টিমেয় কিছু কৃষক সামান্য কিছু ক্ষতিপূরণ পেলেও ২০২১ সাল থেকে সেই ক্ষতিপূরণ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয় ডিভিসি বলে অভিযোগ। অবশেষে আজ সকাল থেকেই প্রায় এক হাজারেরও বেশি কৃষক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গেটের সামনে বসছেন অবস্থান বিক্ষোভে। কৃষকদের দাবি ডিভিসি তাদের কাছে আশীর্বাদ নয় ডিবিসির লাগামহীন দূষণ তাদের জীবনের গতিপথে অভিশাপে পরিণত হয়েছে। যদিও ডিভিসি কর্তৃপক্ষ সংবাদমাধ্যমের সামনে কোন প্রতিক্রিয়া দিতে চায়নি।