জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী:- পেশায় একজন সফল আইনজীবী হলেন হাওড়ার আন্দুল-মৌড়ীর সুদীপ্তা দাস চৌধুরী। তিনি মা-বাবার একমাত্র কন্যা। স্বাভাবিক ভাবেই নিজের পেশার জগতের সহকর্মীদের পাশাপাশি আত্মীয়স্বজনের উপস্থিতিতে ঝলমলে রঙিন পরিবেশে নিজের জন্মদিন পালন করতেই পারতেন। কিন্তু ছোট থেকেই তার মনের মন্দিরে জমা হয়ে আছে অন্য ভাবনা – সবার সাথে সবার মাঝে নিজের আনন্দ ভাগ করে নেওয়া। বেছে নেন নিজের জন্মদিনটিকে।স্বপ্ন পূরণের জন্য পাশে পেয়ে যান নিজের পাড়ার ‘জীবন চেতনা’ সংস্থার সদস্যদের। সুদীপ্তা দেবী নিজেও ওই সংস্থার একজন সক্রিয় সদস্যা।
১৫ ই জানুয়ারি নিজের জন্মদিনে মা অনুরাধা দেবী সহ ‘জীবন চেতনা’-র অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে সুদীপ্তা দেবী পৌঁছে যান হাওড়া জেলা হাসপাতালের শিশু বিভাগে। সেখানে ভর্তি থাকা দুধের শিশুদের মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয় কিছু ফল ও শুকনো খাদ্য সামগ্রী। তারপর তারা হাজির হন মানসিক ভারসাম্যহীন বিভাগে। সেখানে চিকিৎসারত মানুষদের হাতে তুলে দেওয়া হয় কিছু ফল ও শুকনো খাদ্য সামগ্রী। ফেরার সময় পথের ধারে প্রবল ঠাণ্ডায় কম্পমান দু’জন অসহায় মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হয় ফল। এই মহতী কাজে ‘জীবন চেতনা’-র পক্ষ থেকে সুদীপ্তা দেবীর সঙ্গে ছিলেন সোমা কর্মকার, মুনমুন দেবনাথ, বনলতা দত্ত, শুভাশীষ বোধক সহ অন্যান্যরা।
সুদীপ্তা দেবী বললেন – মানুষের পাশে থাকার শিক্ষাটা ছোট থেকেই আমি আমার মা অনুরাধা দেবীর কাছে পেয়েছি। আজ আমি নিজে একজন মা। তাই জন্মদিনে ওই দুধের শিশুদের পাশে থাকার সিদ্ধান্ত নিই। আজ যে আনন্দ পেলাম সেটা ভাষায় প্রকাশ করার ক্ষমতা আমার নাই। শিশুদের স্বর্গীয় হাসি ও মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষদের নীরব ভালবাসা আমার সবচেয়ে বড় পাওনা। সুযোগ পেলে আবার এখানে আসব। তখন মনে হচ্ছিল সুদীপ্তা শুধু নিজ সন্তানের জননী নয় ওই সমস্ত শিশুদের জননী।
সহযোগিতার জন্য হাওড়া জেলা হাসপাতালের সুপার নারায়ন চট্টোপাধ্যায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ‘জীবন চেতনা’-র পক্ষ থেকে শুভাশীষ বাবু বললেন- সুদীপ্তার মত অন্যান্য সহৃদয় ব্যক্তিরা যদি এগিয়ে আসেন তাহলে আরও বেশি সংখ্যক অসহায় মানুষের কাছে আমরা পৌঁছে যেতে পারব। একদিনের জন্য হলেও কিছু মানুষের মুখে তো হাসি ফুটবে।