জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী:- ওরা কেউ টোটো বা ট্যাক্সি চালায়, রিক্সা টানে। কেউবা হকারি করে। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উদয়-অস্ত কঠোর পরিশ্রম করে ওরা সংসার চালায়। এত কষ্টের মাঝেও সমাজের প্রতি ওদের একটা দায়বদ্ধতা আছে সেটা যে ওরা ভোলেনি তার প্রমাণ পাওয়া গেল ৭৫ তম প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন।
গুসকরা তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের উদ্যোগে এবং গুসকরা আপন ওয়েলফেয়ার সোসাইটি ও ওয়েষ্ট বেঙ্গল ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স সোসাইটির সহযোগিতায় ২৬ শে জানুয়ারি বারোয়ারি তলায় আয়োজিত হয় এক স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরের। স্টেট ব্লাড ট্রান্সফিউশন কাউন্সিলের শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ভ্রাম্যমান বাসের মধ্যে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক শাখার সহযোগিতায় শিবির থেকে মোট ৬০ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করা হয়। রক্তদাতাদের মধ্যে ২ জন ছিলেন মহিলা। প্রায় ত্রিশ জন এই প্রথমবার রক্তদান করলেন। ইচ্ছে থাকলেও বিভিন্ন সমস্যার জন্য অনেকেই রক্তদান করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। সংগৃহীত রক্ত সংশ্লিষ্ট ব্লাড ব্যাংক কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত গত কয়েকমাস ধরে গুসকরা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার বিভিন্ন প্রান্তে স্থানীয়দের উদ্যোগে এবং গুসকরা আপন ওয়েলফেয়ার সোসাইটি ও পূর্ব বর্ধমান জেলা ভলান্টারী ব্লাড ডোনার্স ফোরাম এর সহযোগিতায় যেভাবে একের পর এক স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন হচ্ছে তাতে বলা যায় খুব শীঘ্রই ‘থ্রি মাস্কেটিয়ার্স’ শব্দবন্ধনী এলাকা জুড়ে জনপ্রিয়তা লাভ করতে চলেছে। রক্তদাতাদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য শিবিরে উপস্থিত ছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি মহ. সেলিম, জেলা সহ সভানেত্রী মল্লিকা চোংদার, তৃণমূল শহর সভাপতি দেবব্রত শ্যাম ও যুব সভাপতি কার্তিক পাঁজা, অরুণ সাউ সহ শ্রমিক সংগঠনের অন্যান্য পদাধিকারী, আপন ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি শিশির কুমার ঘোষ, গুসকরা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান বেলি বেগম ও চেয়ারম্যান কুশল মুখোপাধ্যায় সহ বেশ কয়েকজন কাউন্সিলার এবং সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার স্বেচ্ছাসেবকরা।
রক্তদান শিবিরের আয়োজন করার জন্য উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে সেলিম সাহেব বললেন- আমি আমার শ্রমিক ভাইদের জন্য গর্বিত। সারাদিন কঠোর পরিশ্রম করার পরও সমাজের প্রতি তারা যে তাদের দায়িত্ববোধের কথা ভোলেনি তার জন্য তাদের কুর্ণিশ জানাই। পাশাপাশি আসন্ন লোকসভা ভোটে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করার জন্য সমস্ত তৃণমূল কর্মীদের তিনি আহ্বান জানান। অন্যদিকে কুশল বাবু বললেন – যত বেশি মানুষ রক্তদান করতে এগিয়ে আসবে তত বেশি সমাজ উপকৃত হবে। মাথায় রাখতে হবে মুমূর্ষু রুগীদের জন্য রক্ত অপরিহার্য হলেও এখনো বিজ্ঞান রক্তের বিকল্প তৈরি করতে পারেনি।