মনোজ সিংহ, দুর্গাপুরঃ- শিল্পাঞ্চল দূর্গাপুরে, আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কড়া নজরদারির ফলে বেশ কিছু দুষ্কৃতী গা ঢাকা দিতে শুরু করেছে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের আশেপাশের কয়টি গ্রাম অঞ্চলে। শিল্পাঞ্চল ও কয়লা অঞ্চলের ঠিক মাঝামাঝি অবস্থানগত সুবিধা থাকার ফলে এই দুষ্কৃতীরা বিভিন্ন দুষ্কর্ম ঘটিয়ে চলেছে ওই গ্রামগুলিতে গোপনে ও অতিষ্ঠ করে তুলেছে এলাকার বাসিন্দাদের। এমনই অভিযোগ করা হল পশ্চিম বর্ধমান জেলাশাসকের কাছে।
দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের এক জনৈক ব্যক্তি যিনি একটি সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে সামাজিক কাজ করে বেড়ান দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল এলাকায়। তিনি পশ্চিম বর্ধমান জেলার মাননীয় জেলাশাসক ও দুর্গাপুর মহকুমা শাসকের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেছেন যে, দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের পশ্চিম প্রান্তে ইছাপুর গ্রাম এলাকায় রোম রোমিয়ে চলছে অবৈধ জুয়ার বোর্ড। অভিযোগকারী তার অভিযোগে জানিয়েছেন ইছাপুর গ্রামের একটি নামকরা ক্লাব ঘরের পাশে প্রতিদিন বিকাল ৩ টে থেকে মধ্যরাত্রি অবধি চলে বিভিন্ন মানুষের আনাগোনা ও চলে অবৈধ জুয়ার বোর্ড। প্রতি ঘন্টায় কেউ না কেউ হারছেন এই অবৈধ জোয়ার বোর্ডে ও সর্বস্বান্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগকারী অভিযোগ জানিয়েছেন। জেলাশাসককে লেখা চিঠিতে অভিযোগকারী পরিষ্কার করে তিন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেছেন, যারা হল ইছাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা মুস্তাক, আশরাফ ও লালটু। তিনি এও অভিযোগ করেছেন ওই তিন ব্যক্তি নাকি স্থানীয় পুলিশের একাংশের সাথে যুক্ত হয়ে পঞ্চায়েতের কয়েকজন দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে রেখেছেন যাতে তাদের এই অবৈধ জুয়ার বোর্ডের ব্যবসার খবর বাইরে প্রচার না হয়। এমত অবস্থায় ইছাপুর গ্রামের ওই এলাকায় বসবাসকারী মানুষজনের জীবনযাত্রা ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। ওই গ্রামেরই কিছু মস্তানকে নিযুক্ত করে এই অবৈধ জুয়া খেলার বোর্ড চলছে বলে অভিযোগ করেছেন অভিযোগকারী । বহিরাগত মদ্যপ যুবক ও দুষ্কৃতীদের ভয়ে এলাকাবাসি মুখ খুলতে পারছেন না বলেও অভিযোগ জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে দুর্গাপুর মহকুমা শাসক ডঃ সৌরভ চট্টোপাধ্যায় কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি সত্যতা যাচাই করতে সংশ্লিষ্ট লাউদোহা থানার পুলিশ আধিকারিককে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছি।” এ বিষয়ে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের অন্তর্গত লাউদোহা থানার পুলিশ আধিকারিককে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “গতকাল মাননীয় মহকুমা শাসকের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে আমরা তদন্ত শুরু করেছি। গত রাত্রে আমরা ওই এলাকায় নজরদারি চালিয়েছি। কিন্তু কাউকেই তেমন ভাবে দেখতে পাওয়া যায়নি। আশেপাশের এলাকার মানুষজনের সঙ্গে কথা বলে দ্রুততার সাথে এই অবৈধ জুয়ার বোর্ড যদি চলে থাকে তা বন্ধ করার জন্য কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে পুলিশের পক্ষ থেকে।”
উল্লেখ্য দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে এর আগেও বহু নামকরা হোটেল থেকে জুয়ার বোর্ড চালানোর অভিযোগে একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাই সম্ভবত দুষ্কৃতিকারীরা শিল্পাঞ্চলের বড় নামকরা হোটেল গুলিতে সুরক্ষিতভাবে তাদের এই অবৈধ জুয়ার ব্যবসা না চালাতে পেরে শিল্পাঞ্চলের আশেপাশের গ্রামগুলিতে ঘর ভাড়া নিয়ে এই অবৈধ জুয়ার ব্যবসা রম রমরমা চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। অবিলম্বে রাজ্য প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের ঘটনার অবিলম্বে তদন্ত করে সাধারণ মানুষকে এই সর্বনাশা অবৈধ জুয়ার বোর্ড থেকে সর্বস্বান্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করা উচিত।