মনোজ সিংহ, দুর্গাপুরঃ- শিল্পনগরী দুর্গাপুর এখন আতঙ্কনগরীতে পরিণত হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই শিল্পাঞ্চলে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ডিএসপি, এএসপি বা কখনো আবার বেসরকারি কারখানায় ভয়ংকর সব দুর্ঘটনায় প্রাণ যাচ্ছে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে রোজগার করা শ্রমিকদের।
গত বৃহস্পতিবার দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার ভেতর এক ভয়াবহ দুর্ঘটনায় আগুনে জ্বলছে ৫ শ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছিল। একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তারা। আজ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল তাদেরই একজন ট্রেড অ্যাপ্রেন্টিস সর্বশিৎ ধাঙর। ক্ষোভে পুষছে গোটা শিল্পাঞ্চলের ইস্পাত কর্মীরা। আবার ঠিক তার ৭২ ঘণ্টা পেরোতে না পেরেতেই দুর্গাপুর মিশ্র ইস্পাত কারখানায় ভয়াবহ দুর্ঘটনায় বেশ কয়েকজন শ্রমিক গলিত লোহার আগুনের ঝলসে যায়। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা যাচ্ছে। শ্রমিক মৃত্যুর ফলে একরাশ ক্ষোভ উজাড় করে দেন ইস্পাত শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়নের কর্মকর্তারা। তাদের দাবি ইস্পাত কর্তৃপক্ষের চরম অপদার্থতার ফলে মরতে হচ্ছে সাধারণ শ্রমিককে। প্রত্যেক মৃত শ্রমিকের পরিবারকে সর্বোচ্চ আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও চাকরি দিতে হবে বলে তারা দাবি করেন। সমস্ত ট্রেড অ্যাপ্রেন্টিসদের স্থায়ী চাকরি দিতে হবে বলে দাবি জানান। দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার সেফটি বিভাগকে অবিলম্বে শ্রমিক নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে বলে দাবি জানানো হয়।
এরই মধ্যে আজ সকালে হঠাতই বিকট শব্দে কেঁপে উঠলো দুর্গাপুরের ফুলঝোড় মোড় সংলগ্ন বি ওয়ান মোড়ের ইন্ডিয়ান অয়েল হাউসিং কমপ্লেক্স। ঘটনার কথা জানাতে গিয়ে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “হঠাৎই এক বিকট শব্দে কেঁপে উঠল গোটা এলাকা। কয়েক মুহূর্তের মধ্যে ইন্ডিয়ান অয়েল হাউসিং কমপ্লেক্স তিন তলা থেকে ভয়ঙ্কর রূপে আগুন বেরতে দেখা যায়। উপস্থিত স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন সম্ভবত তিন তলার একটি আবাসনে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ফলে এই আগুন। তৎক্ষণাৎ খবর দেওয়া হয় পুলিশ ও দমকল বাহিনীকে। পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে আনতে পৌঁছায় দমকলের দুটি ইঞ্জিন। তৎপরতার সাথে নিউ টাউনশিপ থানার পুলিশ সহ দুর্গাপুর দমকল বাহিনীর কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। দ্রুততার সাথে আহত এক বৃদ্ধা ও এক কিশোর সহ ওই আবাসনের চারজনকে দুর্ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে বিধাননগর স্থিত একটি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থলে উদ্ধার কার্য চালাতে গিয়ে আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মী। তবুও অগ্নিগ্ধ অবস্থায় স্থানীয় পুলিশকর্মীরা আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে সাহায্য করেন। শেষ পাওয়া খবর থেকে জানা গিয়েছে প্রায় এক ঘন্টার কড়া প্রচেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে এসেছে আগুন।