সংবাদদাতা, রানিগঞ্জঃ- ৫০ একরেরও বেশি জমিতে কয়লা খনির জল ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে জমে রয়েছে। এই জল জমে থাকায় বিশাল পরিমাণের সেই চাষযোগ্য জমি দীর্ঘদিন ধরে হয়ে রয়েছে জলমগ্ন। যার জেরে ঐ সকল জমিতে চাষাবাদ বন্ধ থাকায় নিরুপায় অবস্থার মধ্যে দিয়ে দিন কাটছে এলাকার কয়েকশো বাসিন্দার। এই বিষয় নিয়ে ইসিএলকে বারবার ঐ সকল জমি অধিগ্রহণ করার দাবী জানালেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। গোটা বিষয়কে সামনে রেখে এবার কয়লা খনির উৎপাদন বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখালেন পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের রানিগঞ্জের বাঁশড়া গ্রামের কয়েকশো গ্রামবাসী। শুক্রবার এই বিক্ষোভের জেরে সকাল আটটা থেকে সাড়ে দশটা পর্যন্ত স্তব্ধ হয়ে যায় বাঁশড়া সি’পিট কোলিয়ারির কয়লা উৎপাদনের কাজ।
শুক্রবার সকালে ঐ এলাকায় গিয়ে দেখা গেলো ইসিএলের কুনুস্তোরিয়া এরিয়ার বাঁশড়া কোলিয়ারির সি’পিট খনি মুখে কয়লা খনির উৎপাদন দু’ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন ।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, দীর্ঘ প্রায় ১০-১২ বছর তাদের বিস্তীর্ণ এলাকার চাষযোগ্য জমি ব্যবহার করছে ইসিএল। সেখানে খোলা মুখ কয়লা খনির জল ফেলে, বিস্তীর্ণ এলাকাকে জলাভূমিতে পরিণত করে, তাদের চাষযোগ্য জমিকে ব্যবহারের অযোগ্য করে দিয়েছেন। এভাবে প্রায় ৫০ একর জমি নষ্ট হয়ে গেছে বলেই দাবি করেন তারা। আগের মতো এবারও বিক্ষোভ আন্দোলনে সামিল হন গ্রামবাসীরা। তারা এদিন কয়লা খনির খনি মুখে বিক্ষোভ অবরোধ করে কয়লা খনির উৎপাদন বন্ধ করে দেন। খনি কর্মীদের কয়লা খনিতে যেতে বাধা দিয়ে, তারা নিজেদের দাবিতে অনড় থাকেন। দীর্ঘক্ষন তারা কয়লা খনির এজেন্টকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। সেই খবর পেয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে রানিগঞ্জ থানার পাঞ্জাবি মোড় ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
পুলিশ বিক্ষোভকারীদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করে । যদিও সে আশ্বাসে কর্ণপাত না করে, গ্রামবাসীরা তাদের দাবিতে অনড় থাকেন। এরপরই পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠায় কয়লাখনিতে এসে পৌঁছান ইসিএলের কুনুস্তোরিয়া এরিয়ার এজিএম অনন্ত ঘোষ। তিনি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে গোটা বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেন। পরে তিনি এই সমস্যার সমাধান সাত দিনের মধ্যেই করা হবে বলে আশ্বাস দেন। তাতে এদিনের মতো বিক্ষোভকারীরা তাদের বিক্ষোভ তুলে নেন। যদিও বিক্ষোভকারীরা এরপরেও পরিষ্কার করে জানিয়ে দেন, ৭ দিনের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে আগামী দিনে আরও বড় আন্দোলনে নামবেন তারা।