মনোজ সিংহ, দুর্গাপুর:- দারুন মধু ডিএসপি তে। আর ওই মধুর এতই নেশা যে হিতাহিত জ্ঞান নেই শাহাবুদ্দিন, আজিমুদ্দিন, মনি’দের। তাইতো, রমজান মাসে গাজায় যুদ্ধ বিরতি হলেও, মারামারির বিরাম নেই আমরাই’য়ে।
ভোট প্রচারে আসা তারকা প্রার্থীর সামনেই জামা গুটিয়ে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লো শাসক তৃণমুল কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠীর ‘কাটমানি পুষ্ট’ আমরাই গাঁয়ের নেতারা,যারা নাকি ডিএসপি শাসন করে বছরভর!
রবিবার ছুটির দিন সকাল সকাল সংখ্যালঘু অধ্যুষিত আমরাই – আরতি গ্রাম গুলিতে ভোট প্রচারে আসেন তৃণমুল কংগ্রেসের প্রার্থী কীর্তি আজাদ। কিন্তু, বিসমিল্লায় গলদ। আমরাইয়ের শংকরানন্দা আশ্রমের সামনে আজাদ পৌঁছতেই তাঁকে বরণ করতে ফুলের মালা হাতে এগিয়ে আসেন শেখ শাহাবুদ্দিন ঘনিষ্ঠ মানিক শেখ, আজিমুদ্দিন শেখ। তাঁদের দেখেই মারমুখী মনি ওরফে আমিরুল ইসলাম শেখ। ইনিই এখন আই এন টি টি ইউ সি’ র জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটকের স্নেহ ছায়ায় আজিমুদ্দিনের বদলি নেতা, বাহুবলী। সামাজিক ভাবে আজিমউদ্দিনের তুলনায় অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য হলেও, রবিবার আজিমউদ্দিনকে মালা হাতে দেখে প্রার্থীর সামনেই ধৈর্য্য হারা হলেন মনি। বোকার মতো তেড়ে গেলেন। অন্দরমহলের সূত্রে জানা গেছে, ইদানিং শহরের বিধাননগর এলাকায় বসবাসকারী এক আই এন টি টি ইউ সি নেতার ঘরে আজিমউদ্দিনের ঘন ঘন যাতায়াতে এমনিতেই হতাশায় ভুগছিলেন মনি, তাই হাতের কাছে তাকে পেয়ে, বিশেষ করে প্রার্থীকে মালা পরাতে যেতে দেখেই রেগে অগ্নিশর্মা হয়ে ওঠেন তিনি। এই শাহাবুদ্দিন, আজিমউদ্দিনদেরকে দূর্নীতি, তোলাবাজির দায়ে ঠিকা শ্রমিক ইউনিয়ন থেকে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বহিষ্কার করে আই এন টি টি ইউ সি’ র রাজ্য কমিটি। তাদের সাথেই ফের কিছু স্থানীয় নেতার গুজগুজ, লুকিয়ে দেখা কি তবে নতুন করে বখরার লোভে – এ প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে, রবিবারের ঘটনার পর।
এদিকে, দুই গোষ্ঠীর এই মারামারি দেখে ভীত কীর্তি দৌড়ে ঢুকে পড়েন পাশের মন্দিরে। তাঁকে দেখাযায় মন্দিরের সিঁড়িতে বসে মন্দিরের ঘণ্টার তালে তালি মেলাতে। হতভম্ব হয়ে পড়েন স্থানীয় টিএমসি সমর্থকেরাও। পরিস্থিতি সামাল দিতে শাহাবুদ্দিন ছুটে এসে বলেন, “কোনো গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব নয়। একটু হুড়োহুড়ি হয়েছে মাত্র।” কীর্তি শাক দিয়ে মাছ ঢাকার কায়দায় বলেন, “এটা আসলে দলের প্রার্থীর জন্য সমর্থকদের অতি উচ্ছাসের বহিঃপ্রকাশ।” কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “আমি টিএমসি প্রার্থীকে বলবো – আগে ঘর সামলা, পরে দেখবি বাংলা। ও পাগল হয়ে পালাবে।”