সংবাদদাতা, আসানসোল:- চলতি এপ্রিল মাসের শেষ রবিবার একদিনের জন্য কয়েক ঘন্টার ঝটিকা প্রচারে এসে আত্মবিশ্বাসী “মহাগুরু ” মিঠুন চক্রবর্তী। বাংলায় বিজেপি এবারের লোকসভা নির্বাচনে ” ৩৫ ” পার করবে? এর উত্তরে পদ্ম শিবিরের ন্যাশানাল এক্সিকিউটিভ সদস্য বর্ষীয়ান অভিনেতা, এখনো বলার সময় আসেনি। তবে তার দাবি, ৪০০ পার হলে বড় গুড নিউজ পাবেন। তবে সেই গুড নিউজ কি? তা বারবার সাংবাদিকরা জানতে চাইলেও, তার কোন ” হিনটস্ ” তিনি দেননি। এদিন, তিনি নিজের দলের প্রার্থীর সঙ্গে তৃনমুল কংগ্রেসের প্রার্থীর তুলনা করেন ও বলেন, কেন এসএস আলুওয়ালিয়াকে আসানসোলের মানুষেরা ভোট দেবেন।
এদিন দুপুরে আসানসোলের জিটি রোডের উষাগ্রামে একটি হোটেলে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় মিঠুন চক্রবর্তীর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিলো, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপনাকে গদ্দার বলেছেন। উত্তরে তিনি বলেন, তাহলে উনি ” গদ্দারিণী”। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, অমিতাভ বচ্চন ও শত্রুঘ্ন সিনহাকে ভারতরত্ন দেওয়া উচিত। উত্তরে তিনি বলেন, এর জন্য আলাদা কমিটি আছে। এটা তারা দেখবে। আর অমিতাভ যখন পদ্ম পুরস্কার পেয়েছিলেন তা নিয়ে তাহলে তখন কিছু বলেননি। রাজ্যের শাসক দলে তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, ইডি , সিবিআই ও এনআইএকে দিয়ে বিজেপি এবার ভোটে জেতার চেষ্টা করছে। সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে মিঠুন বলেন, বোগাস। বাংলায় এত বোমা ও বন্দুক আসছে কি করে চারদিকে। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এত বোমা যারা তৈরি করছে তারা ধরা পড়ছে। নিশ্চয়ই কাউকে মারার জন্য তা তৈরী করা হচ্ছে। কিন্তু যে মরবে সে তো আমার দেশেরই মানুষ। এটা অন্ততঃ একবার তো ভাবুক। আর আমাদের দল থেকে বলে দেওয়া হয়েছে কোন রকম হিংসা ও সন্ত্রাস করা যাবে না। বিজেপি দাঙ্গা করায় বলে বিরোধীদের অভিযোগ। এর উত্তরে তিনি বলেন, এটাও আসলে ওরাই করায়। আমাদের দলে হিংসার কোন স্থান নেই। দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চরমতম মিথ্যাবাদী বলা হয় বিরোধীদের। এই প্রসঙ্গে তিনি হেসে বলেন, তাহলে যুধিষ্ঠিরের বিষয়টি কি হবে?
আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের তৃনমুল কংগ্রেসের প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহা সিনহা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, উনি একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ। আমাদের দলে ছিলেন বহুদিন। তবে এখানে এসে ঠিক করেননি। আমাদের দলের মন্ত্রীও ছিলেন। তিনি রং জায়গায় আছেন। আর আমাদের দলের প্রার্থী রাইট জায়গায় আছেন। বাংলায় দুর্নীতি প্রসঙ্গে মিঠুন বলেন, এখন ধীরে ধীরে তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতিগুলো প্রকাশ্যে আসছে। আসানসোল শিল্পাঞ্চলে এতো রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা একের পর এক বন্ধ হয়ে গেছে। এর উত্তরে তিনি বলেন , এইসব নিয়ে অনেকে চিৎকার চেঁচামেচি করছেন। কিন্তু এখানকার বাসিন্দারা জানেন কেন এগুলো বন্ধ হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন সভা থেকেই আপনাকে এতো আক্রমণ করছেন কেন? এটা কি ব্যক্তিগত? তার উত্তরই তিনি বলেন, আমাকে দেখতে ভিড় প্রচুর হচ্ছে। মানুষের মধ্যে বাড়ছে উন্মাদনা। তা দেখে উনি এইসব কথা বলছেন। একজন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে এটা বোধহয় বলা উচিত নয়। উনি বলেন আমি নাকি রাজনীতি করিনি। আমি ১৮ বছর বয়সে ছাত্র পরিষদের প্রতিনিধি ছিলাম। সেই সময় থেকে রাজনীতি করি।
রাজ্যের শাসক দল বিরোধীদের বিসর্জন দেওয়ার কথা বলছে। এর প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে মিঠুন বলেন, বিরোধীরা থাকলেই ওনাদের চুরি করতে অসুবিধা হচ্ছে। দুর্নীতি করতে অসুবিধা হচ্ছে। সেই জন্যই বিসর্জনের কথা বলছেন। উনি ( পড়ুন মুখ্যমন্ত্রী) তো বলেন আমি নাকি বহিরাগত। তাহলে এবার আমায় তো বলতে ওদের অনেকেই আছেন যারা নাকি ভূমি থেকে ফুটে ফুটে বেরিয়ে ভূমিপুত্র হয়েছেন।