সঙ্গীতা চ্যাটার্জী, তারকেশ্বরঃ- মা কালী মানেই তিনি কৃষ্ণবর্ণা, চতুর্ভূজা- এমনটাই আমরা জেনে থাকি। ইদানিং কালে নালিকুলের সবুজ কালী মায়ের কথা আমরা জেনেছি, যিনি দুর্বা ঘাসের মত সবুজ রঙের, কিন্তু অস্তগামী সূর্যের রঙের মতো মায়ের মূর্তি কি কখনো দেখেছেন? দেখেন নি তো ? লোকনাথের ভবানী মায়ের মন্দির দর্শন করলেই আপনার সেই ইচ্ছা পূর্ণ হবে। হাওড়া থেকে তারকেশ্বরগামী ট্রেনে উঠলে তারকেশ্বরে নামার আগেই একটি স্টেশন পরবে,এই স্টেশনের নাম লোকনাথ। এখানে দেবী দ্বিভূজা আর দেবীর গায়ের রং উদীয়মান সূর্যের মতো।
মায়ের এই মন্দির আনুমানিক ১৪০০ বছরের পুরোনো। মায়ের এই মন্দিরকে কেন্দ্র করে রয়েছে নানান অলৌকিক গাঁথা। শোনা যায়, এখন যেখানে মায়ের মন্দির আগে সেখানে ছিল দামোদরের শাখা কানা নদী। নদীর পাড়েই ছিলো শ্মশান যেখানে পুঁজিতা হতেন মা ভবানী। তখন সেখানে এক তান্ত্রিক আসতেন, তাকে মা স্বপ্ন দিয়ে বলেন, এই নদী দিয়ে ভেসে আসবে অশ্বত্থ কাঠ। সেই কাঠ দিয়েই তৈরি করিস আমার মূর্তি।
মায়ের স্বপ্নাদেশ অনুযায়ী সত্যি সত্যি নদী দিয়ে ভেসে আসে অশ্বত্থ কাঠ এবং তারপর পাওয়া যায় এক অন্ধ মানুষ যিনি তান্ত্রিকের স্বপ্নে দেখা মাতৃমূর্তি নির্মাণ করেন । ঐ তান্ত্রিক সে সময় নরবলি দিতেন, কথিত আছে, যাদের নরবলি দেওয়া হতো তারা স্কন্ধকাটা রূপে মন্দিরের পাশের বকুল গাছে অবস্থান করতেন এবং মাকে পাহারা দিতো। মন্দিরের এক কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে রূপরায়ের মন্দির (রূপ রায় আসলে সিংহ)। ইনি দেবীর বাহন।
জনৈক ভক্তের কথায় তারা দেখেছেন রাত্রে বেলায় দেবী সিংহের পিঠে করে গ্রাম প্রদক্ষিণ করেন। একবার একজন এই দৃশ্য দেখে ফেলেন, তারপর সেই ঘটনার কথা গোপন রাখতে বলেন দেবী, কিন্তু অতি কৌতূহলবশত ওই ব্যক্তি সেই কথা সকলকে বলে দেয়, তারপর তার মৃত্যু হয়। আজও এই দেবী ও মন্দিরকে কেন্দ্র করে নানা অলৌকিকতা বিরাজমান,যদি আপনিও এর সাক্ষী হতে চান তাহলে অবশ্যই দর্শন করতে হবে লোকনাথের দেবী ভবানীর মন্দির।