eaibanglai
Homeএই বাংলায়দুর্গাপুরের শিশু অপহরণ কাণ্ডে কি ভয়ংকর ধর্মীয় তান্ত্রিক ক্রিয়ার পথে তদন্ত?

দুর্গাপুরের শিশু অপহরণ কাণ্ডে কি ভয়ংকর ধর্মীয় তান্ত্রিক ক্রিয়ার পথে তদন্ত?

নিজস্ব সংবাদদাতা, দুর্গাপুরঃ- আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের অন্তর্গত দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল এখন সাধারণ মানুষের আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুরে দিনে দুপুরে হার ছিনতাই, ডাকাতি, চুরি, খুন সহ একাধিক অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে দিনের পর দিন। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট এর দক্ষ পুলিশ অফিসাররাও এখন দিশাহীন হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ। বেশ কয়েক মাস যাবত পার্শ্ববর্তী ঝাড়খন্ড, বিহার ও উত্তরপ্রদেশের দুষ্কৃতিদের দল বারবার হানা দিচ্ছে শিল্পাঞ্চলে। ওইসব বহিরাগত দুষ্কৃতিদের নাগাল পেতে হিমশিম খাচ্ছে দুর্গাপুর পুলিশ।

সূত্র মারফত জানা গেছে, বিগত বেশ কিছুদিন থেকে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের অন্তর্গত দুর্গাপুর থানা এলাকায় চুরি, ছিনতাই, খুন, ডাকাতি, ব্যাংক জালিয়াতি, সাইবার অপরাধসহ একের পর এক ঘটনায় নাম এসেছে বিহার, ঝাড়খন্ড ও উত্তরপ্রদেশের দাগি অপরাধীদের। তাহলে কি পার্শ্ববর্তী ওইসব রাজ্যের দুষ্কৃতীরা দুর্গাপুর আসানসোল শিল্পাঞ্চলে এবার ঘাটি গেড়েছে? রোজ নতুন নতুন ফন্দি নিয়ে এইসব দাগি অপরাধীদের নিখুঁত অপারেশন দেখে মাথায় হাত আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের দক্ষ গোয়েন্দা বাহিনীর অফিসারদের ? এতসবের মধ্যে আবার গত সোমবার সন্ধ্যায় আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের অন্তর্গত দুর্গাপুর থানার পুলিশের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে উঠলো শিশু অপহরণ কান্ড ।

গত ১৭ ই জুন রবিবার সন্ধ্যায় দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের ইস্পাত নগরীর তিলক রোড সংলগ্ন বস্তির সামনের মাঠে খেলা করছিলেন দু বছর বয়সী শিশু কন্যা সুমিত্রা সাহু। হঠাতই এক অজ্ঞাত পরিচয় দম্পতি অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে ছোট্ট সুমিত্রাকে মোটরসাইকেলে বসিয়ে চম্পট দেয় এলাকা থেকে। সেই সময় সুমিত্রার দিদা ও তার দুই বোন সোনিয়া ও সুকিয়া তার সাথেই ছিল। ঘটনার সময় স্থানীয় উপস্থিত মানুষজন গাড়িটির পিছু ধাওয়া করলেও তাদের নাগাল পাওয়া যায়নি। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হলে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের দুর্গাপুর থানার গোয়েন্দা বিভাগ সক্রিয় হয়ে তল্লাশি অভিযানে নামে। কিন্তু শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী ৩০ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও ওই ছোট্ট শিশু কন্যাকে এখনো উদ্ধার করা যায়নি বলে পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে।

দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে এই প্রথম দু বছরের শিশুদের অপহরণের কান্ড নতুন নয়, এর আগেও বেশ কয়েকবার দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে তিন বছরের নিচে শিশুদের অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে ধর্মীয় তান্ত্রিক ক্রিয়ার যোগ। সমাজে এমন বেশ কিছু মানুষ রয়েছেন যারা নিজেদের অসাধু মনস্কামনা পূর্ণ করার লক্ষ্যে এক প্রকার ভন্ড, দুরাচারী, পিশাচ প্রবৃত্তির মানুষের হাতে তুলে দিয়েছেন শিশুদের বলির উদ্দেশ্যে। আগে বহু প্রাণ গিয়েছে তিন বছরের নিচে শিশুদের। শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুরে থেকে বহু বছর আগে এইরকমই এক ঘটনার সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে বেনাচিতি অঞ্চলের এক সাধুকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল। তাহলে কি শিল্পাঞ্চলে আবার কোন নর পিশাচ ভন্ড সাধুর বেশ ধরে শিল্পাঞ্চলের শিশুদের প্রাণ নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে?

আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকদের এখন মাথায় সেই দিকেই চিন্তা রয়েছে। দ্রুত সময় পার হয়ে যাওয়ার ফলে গত রবিবার নিখোঁজ হয়ে যাওয়া খুদে শিশু কন্যাটির বিপদ বাড়ছে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। ইতিমধ্যেই আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের দক্ষ গোয়েন্দা বিভাগ বিভিন্ন সিসিটিভি পরীক্ষা করে ওই শিশু অপহরণ কাণ্ডে যুক্ত দম্পতিকে চিহ্নিত করার কাজ শুরু করেছে। এখন দেখার আর কত সময় লাগে পুলিশের ওই ছোট্ট শিশু কন্যাটিকে অক্ষত অবস্থায় তার মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। তবে এই অপহরণ কাণ্ড নিয়ে ভিন্ন জনের ভিন্ন মতামত সামনে আসছে শিল্পাঞ্চলের আনাচে কানাচে আলোচিত হচ্ছে। এখন প্রশ্ন এই অপহরণ কাণ্ডের পেছনে আসল কারণ কি? কোথা থেকে বা ওই শিশু অপহরণকাণ্ডের ব্লু প্রিন্ট তৈরি করা হয়েছিল? শিশু অপহরণ কাণ্ডে কি কোন পারিবারিক শত্রুতা রয়েছে? এইসব প্রশ্নেরই উত্তর এখন খুঁজছে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের দক্ষ গোয়েন্দা আধিকারিকরা। তবে একটা কথা নিশ্চিত হয়ে বলা যায় যে সাধারণ রাজমিস্ত্রির কাজ করা সুমিত্রার পিতা যে কোনরকম মুক্তিপন দিতে পারবেন না সেটা জলের মতন পরিষ্কার। সহবতই মুক্তিপনের জন্য এই অপহরণ নয় বলেই মনে করছেন দুর্গাপুর আসানসোল পুলিশ কমিশনারেটের একাধিক গোয়েন্দা। সম্ভাব্য সবদিক খতিয়ে দেখে, দ্রুত তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে দুর্গাপুর পুলিশের দক্ষ গোয়েন্দা বিভাগ বলে এখনো পর্যন্ত জানা গেছে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments