সংবাদদাতা, বাঁকুড়াঃ- বাঁকুড়া জেলার ইন্দাস ব্লকের পাহাড়পুর গ্রামের বিকাশ মাঝি, এলাকার এক যুবকের সাথে কাজের সন্ধানে গিয়েছিলেন হায়দ্রাবাদে আর সেখান থেকে নিখোঁজ দীর্ঘ ছয় সাত মাস। হায়দ্রাবাদ কাজের এরিয়ার থানাতে হয়েছে নিখোঁজ ডায়েরি কিন্তু সন্ধান দিতে পারেননি পুলিশ। একজন তরতাজা – শক্ত সামর্থ্য মানুষ কর্মস্থল থেকে কোথায় চলে গেল জানেন না পুলিশ এবং তার সঙ্গী সাথীরা।
সবেমাত্র কাজের স্থলে গিয়েছিলেন, রাস্তাঘাট চেনেন না তবুও কিছু প্রয়োজনীয় সামগ্রিক কিনতে বেড়িয়ে আর ফেরেনি কর্মস্থলে। সঙ্গী সাথীরা বহু খোঁজাখুঁজি করেছে কিন্তু দেখা মেলেনি বিকাশের। বিকাশের সাথে কি হয়েছে তাও জানতে পারছে না তার স্ত্রী পুত্র মেয়ে। পরিবারের উপার্জনকারী মানুষটি নিখোঁজ ছয় সাত মাস। আদৌ তিনি বেঁচে আছেন কিনা জানে না পরিবার-পরিজন। দিনরাত তাদের দুশ্চিন্তা আর চোখের জল সম্বল।
ছোট্ট মেয়ে সবে মাত্র দশম শ্রেণীতে পড়ে, বাবা নেই আর থাকলেও তিনি কোথায় আছেন জানে না সে, এমতাবস্থায় বন্ধ তার পড়াশোনা। এলাকার প্রশাসনও উদাসীন এই ব্যাপারে তাই বাধ্য হয়ে সংসার চালাতে ছেলেকে নিয়ে মা কাজ করে অন্যের ক্ষেতে,কোনমতে চলে সংসার কিন্তু পরিবারের কর্তা সে কি আসবে না আর ফিরে ?
প্রশ্ন তাদের এলাকার যুবককে এবং হায়দ্রাবাদ থানায় মিসিং ডায়েরি করা থানার আধিকারিকদের। একটা জলজ্যান্ত মানুষ ছ-সাত মাস নিখোঁজ অথচ সন্ধান দিতে পারছে না পুলিশ। তবে কি টাকার বল নেই বলে খোঁজ নেই তার ? উঠছে এই প্রশ্নও।
বুকে দুরু দুরু ভয় আর মনে হাজারো প্রশ্নের আনাগোনার মধ্যেই দীর্ঘ ছয় সাত মাস অতিক্রান্ত বিধ্বস্ত পরিবারটির। যাদের ঘরে নুন আনতে পান্তা ফুরায় তাদের বাড়ির কর্তা যদি না থাকে তাহলে তাদের থেকে মারাত্মক রকমের অসুখী যে আর কেউ নেই এই পৃথিবীতে এটা কি বোঝেন প্রশাসন কিংবা সরকার বাহাদুর। অবশ্য এটা ঠিক একজন হা-ভাতের ঘরের মানুষ থাকল কি না থাকলো যায় আসে না কারোর কিছুই কিন্তু যাই আসে তার পরিবারের, তাইতো তারা দিনরাত ফেলছে চোখের জল আবার সংসার চালাতে সকাল হলেই ছুটতে হচ্ছে অন্যের ক্ষেতে খামারে।
৬-৭ মাস সময়টা বেশ দীর্ঘ, মেলেনি কোন প্রশ্নের উত্তর সন্ধান তো অনেক দূরের কথা। আদৌ কি আছে বিকাশ মাঝি বেঁচে, থাকলে কোথায় বার-বার এই প্রশ্ন খাচ্ছে ঘুরপাক স্ত্রীর -পুত্র – মেয়ের মনে! প্রশাসন তারা কি কিছু ভাবছে ? নেই কোন উত্তর। তবে কি বিকাশ মাঝি থেকে যাবে অনুসন্ধানের বাইরে ?