সংবাদদাতা, অন্ডালঃ- গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধানের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারের অভিযোগে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত পঞ্চায়েত কার্যালয়ে তালা ঝোলালেন বিক্ষুব্ধ সদস্যরা । সোমবার পশ্চিম বর্ধমান জেলার অন্ডালের খান্দ্রা গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। বিক্ষুব্ধ গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যদের পাশে দাঁড়িয়ে তৃনমুল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি বলেন, বিষয়টি দলের উচ্চ নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। যা করার তারা করবেন। তবে এই ঘটনায় চরম অস্বস্তিতে পড়েছেন শাসক দলের জেলা ও ব্লক নেতৃত্ব। দলের প্রধান, উপপ্রধান দুজনে সিপিএমের সাথে মিলে পঞ্চায়েতে স্বেচ্ছাচার চালাচ্ছেন, এই অভিযোগকে সামনে রেখে সোমবার খান্দ্রা পঞ্চায়েত কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ পঞ্চায়েত সদস্যরা ।
উল্লেখ্য, এই খান্দ্রা গ্রাম পঞ্চায়েতে ২৩ টি সংসদ আছে। তার মধ্যে ২০ জন তৃণমূল কংগ্রেসের ও ৩ জন রয়েছেন সিপিএমের সদস্য। এর আগে গত বুধবার সুমিতা বাউরি ও আশীষ নন্দী নামে দুজন সদস্য পঞ্চায়েত কার্যালয়ের সদর দরজায় তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। বলতে গেলে সোমবার ঘটল সেই ঘটনা পুনরাবৃত্তি। বলতে গেলে একই অভিযোগে এদিন আরো একবার তালা পড়লো পঞ্চায়েত কার্যালয়ে। তবে এদিন আর দুজন নয়, এবার বিক্ষোভের সামিল হলেন ১০ জন তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য। এদিন বেলা ১২ টা নাগাদ বিক্ষোভরা পঞ্চায়েত অফিসে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। ঘন্টাখানেক পর তালা খুলে দেওয়া হলেও, বিক্ষোভ চালিয়ে যান তারা । বিক্ষোভকারীদের পক্ষে অসীম বারুই, সুমিতা বাউরিরা বলেন, প্রধান অপর্না বাদ্যকর ও উপপ্রধান গণেশ বাদ্যকর দু’জন মিলে পঞ্চায়েতে স্বেচ্ছাচার চালাচ্ছেন। সিপিএম পঞ্চায়েত সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করা হলেও সেই বৈঠকে তৃণমূলের অন্য সদস্যদের ডাকা হয় না। অধিকাংশ সদস্যদের এলাকায় ট্যাঙ্কারের জল পৌঁছাচ্ছে না । উন্নয়নের কোন কাজ হচ্ছে না। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের টাকার কোন হিসাব নেই বলে অভিযোগ করেন তারা। এদিন প্রধান ও উপপ্রধানের ইস্তফার দাবিও জানান তারা।
দলেরই গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যদের অভিযোগ নিয়ে প্রধান অপর্না বাদ্যকরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তার কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় নি। এদিকে, উপপ্রধান গণেশ বাদ্যকর বলেন, অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। ব্যক্তি স্বার্থে বারবার পঞ্চায়েতে তালা দিয়ে দলের বদনাম করার চেষ্টা করছেন দলের হয়ে জেতা কয়েকজন সদস্য ।
অন্যদিকে, এই বিক্ষুব্ধ সদস্যদের পাশে দাঁড়ান দলের অঞ্চল সভাপতি সমীর ভট্টাচার্য । তিনি বলেন, সিপিএমের কথাতে পঞ্চায়েত চালাচ্ছেন প্রধান ও উপপ্রধান। গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না দলের সদস্যদেরকেই । উন্নয়নের কাজ থমকে থাকায় দলের ভাব মূর্তির ক্ষতি হচ্ছে । তিনি আরো বলেন, গোটা বিষয়টি দলের জেলা স্তরে নেতাদের জানানো৷ হয়েছে । তৃণমূলের ব্লক সভাপতি কালোবরন মন্ডল বলেন, প্রধান, উপপ্রধান সহ সব পক্ষের সাথে আলোচনা করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি দলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকেও জানানো হয়েছে বলে জানান কালোবরণ মন্ডল।