সংবাদদাতা, দূর্গাপুর:– নার্সিং পড়তে গিয়ে ভিনরাজ্যে রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হল পশ্চিম বর্ধমান জেলার দূর্গাপুরের কাঁকসার গোপালুপরের এক যুবতীর। রবিবার এই ঘটনার খবরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোপালপুর গ্রামে। শোকের ছায়া নেমে আসে নার্সিং পড়ুয়ার পরিবারে। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজনেরা ব্যাঙ্গালুরু রওনা দিয়েছেন। জানা গেছে, মৃত নার্সিং পড়ুয়ার নাম দিয়া মণ্ডল (২১)। সে গোপালপুর উত্তরপাড়ার সত্যনারায়নপল্লীর বাসিন্দা। তার বাবা দেবাশিষ মন্ডল রাঁধুনির কাজ করেন। রান্নার কাজ করে সংসার চালান তিনি । তার একমাত্র মেয়ে দিয়া।
পরিবার সুত্রে জানা গেছে, স্নাতক পাস করার পর দিয়া মন্ডল ব্যাঙ্গালুরুতে মাদার টেরেসা গ্রুপ অফ ইনস্টিটিউশনে নার্সিং নিয়ে পড়ছিল। নার্সিং পড়াশুনা শেষ করে সংসারের হাল ধরতে চেয়েছিল দিয়া। আরো জানা গেছে, প্রতিদিনই নিয়ম করে হোস্টেল থেকে দিয়া সন্ধ্যেবেলা মাকে ফোন করে কথা বলতো। রোজকার মতোই শনিবার সন্ধ্যে নাগাদ দিয়া ফোন করে মায়ের সাথে কথা বলে। তখনও ঘুণাক্ষরেও তার মা টের পাইনি এরকম মর্মান্তিক পরিনতি হবে মেয়ের। ফোনে কথা বলার ঘন্টা দুয়েক পরে কাঁকসায় দিয়ার এক সহপাঠী বাড়িতে ফোন করে জানানো হয় দিয়ার মারা গিয়েছে। আর আকস্মিক ওই খবর জেনে মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ার মত পরিস্থিতি হয় মন্ডল পরিবারে। তারা জানতে পারেন , হোস্টেলের বিছানার উপরে গলায় দড়ি দেওয়া ঝুলন্ত অবস্থায় তার মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে ।
খবর চাউর হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। শোকস্তদ্ধ হয়ে পড়ে প্রতিবেশীরা। স্থানীয় বাসিন্দা জয়দেব সরকার জানান, দিয়া পড়াশোনায় খুব ভালো। পরিবারও খুবই ভাল। দিয়া নিজেও মিস্টি স্বভাবের মেয়ে। এরকম একটি মেয়ের কিভাবে মৃত্যু হল, ভাবতে অবাক লাগছে। তাই ঘটনার তদন্তের আর্জি জানাচ্ছি।
কাজের সূত্রে দিল্লিতে থাকতেন দিয়ার বাবা দেবাশীষ মন্ডল। এদিন তিনি ফোনে জানান, রান্নার কাজ করে মেয়েকে পড়াশোনা করতে পাঠিয়েছিলাম। মেয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে চেয়েছিল। গোটা ঘটনা আমাদের কাছে ধোঁয়াশা লাগছে। পুলিশ বলছে, পারিবারিক কারন হতে পারে। কিন্তু, বাড়িতে কোনরকম কোন অশান্তি হয়নি। অন্যদিনের মতো শনিবার সন্ধ্যায় মেয়ে তার মায়ের সঙ্গে মতই কথা বলেছে। আমরা ব্যাঙ্গালুরু পৌঁছেছি। থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হচ্ছে। আমাদের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত করছে বলে আমাদেরকে বলা হয়েছে ।