eaibanglai
Homeএই বাংলায়গুসকরা মহাবিদ্যালয়ে আয়োজিত হলো সর্প সংক্রান্ত সচেতনতামূলক আলোচনা সভা

গুসকরা মহাবিদ্যালয়ে আয়োজিত হলো সর্প সংক্রান্ত সচেতনতামূলক আলোচনা সভা

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, গুসকরা, পূর্ব বর্ধমান:- পঠন পাঠনের পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরেই সমাজের প্রতি নিজেদের দায়বদ্ধতার পরিচয় দিয়ে চলেছে গুসকরা মহাবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এলাকাবাসীদের পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন করার জন্য প্লাস্টিকজাতীয় বস্তু বর্জনের পাশাপাশি বৃক্ষরোপণের জন্য উৎসাহিত করছেন অথবা ফাঁকা জায়গায় নিজেরাই ব‍ৃক্ষরোপণ করছেন। কখনো হাতে গ্লাভস ও মুখে মাক্স পড়ে তাদের রাস্তার পাশে পড়ে থাকা আবর্জনা পরিস্কার করতে দেখা যাচ্ছে। বর্তমান প্রজন্মকে সচেতন করার জন্য থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা শিবিরের আয়োজন করা হচ্ছে। এরকম অসংখ্য সমাজসেবামূলক কাজে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে অধ্যাপকদেরও দেখা যাচ্ছে।

এবার বিশ্ব সর্প দিবস উপলক্ষ্যে গত ১৬ ই জুলাই গুসকরা মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ড. সুদীপ চ্যাটার্জ্জীর উৎসাহে এবং প্রাণীবিদ্যা বিভাগের উদ্যোগে ও আইকিউএসি-র সহযোগিতায় মহাবিদ্যালয়ের ‘সেমিনার হলে’ সর্প সংক্রান্ত একটি সচেতনতা মূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনা সভায় মহাবিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ ড. সুদীপ চ্যাটার্জ্জী, ডাঃ সাবিনা বেগম, প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রধান ড. সৌরভ সরকার, ড.সুখেন্দু রায়, রুবিনুর খাতুন, অপর্ণিতা নন্দী রায়, পৌলোমী রায়, উদয় চাঁদ মেটে, ব্রজেন্দ্র নাথ অধিকারী সহ প্রাণীবিদ্যা বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা।

উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সরীসৃপ বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ চৌধুরী, সর্প বিশেষজ্ঞ ধীমান ভট্টাচার্য্য ও চিকিৎসক ডা. সৌভিক দাস। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে যথাযোগ্য মর্যাদা সহকারে অতিথিদের বরণ করে নেওয়া হয়।

স্বাগত ভাষণে ড. সুদীপ চ্যাটার্জ্জী দিনটির গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, বর্ষাকালে সাপের প্রাদুর্ভাব ঘটে। একটু অসচেতনতার জন্য অনেক সময় সাপের কামড়ে মানুষের মৃত্যু ঘটে। অযথা ভয় না পেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার উপর তিনি গুরুত্ব দেন।

প্রতিটি বক্তা সাপ সম্পর্কে অহেতুক ভয় না করার জন্য এবং সর্পদংশন হলে দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে রুগীকে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। একইসঙ্গে নিজ নিজ এলাকার বাসিন্দাদের সাপ সম্পর্কে সচেতন করারও পরামর্শ দেন।

ধীমান বাবু বলেন – সবচেয়ে আশার বিষয় হলো ধীরে ধীরে সাপ সম্পর্কে অনেক কুসংস্কার দূর হয়েছে। সাপে কামড়ালে মানুষ ওঝার পরিবর্তে চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছে। একটু সচেতন হলে আগামী দিনে সাপের কামড়ের ফলে মৃত্যুর হার শূন্য হবে।

এর আগে মহাবিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি সচেতনতামূলক পদযাত্রা বের হয়। ঝিরঝিরে বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে হাতে প্লাকার্ড নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি বিভাগীয় অধ্যাপকদের পদযাত্রায় হাঁটতে দেখা যায়। পরে স্থানীয় গুসকরা বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের সাপ সম্পর্কে সচেতন করা হয়।

সাপ সম্পর্কে গুসকরা মহাবিদ্যালয়ের এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে উত্তর চব্বিশ পরগণার দত্তপুকুরের ‘প্রকৃতি কন্যা’ অদিতি গায়েন বললেন – সাপ একটি ভীরু প্রকৃতির প্রাণী। সাপকে আঘাত না করলে তারা আমাদের কোনো ক্ষতি করবেনা। মূলত ভয় পেয়ে তারা আমাদের দংশন করে। প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য সাপ সহ প্রতিটি বন্যপ্রাণীকে আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে।

প্রসঙ্গত প্রাণীবিদ্যা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী অদিতি ইতিমধ্যে সাপ সহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী উদ্ধার করে তাদের প্রকৃতির কোলে ছেড়ে দিয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ক্লাব দ্বারা আয়োজিত সাপ সম্পর্কিত অনুষ্ঠানে মুখ্য বক্তা হিসাবে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করেছে। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সাপ ও অন্যান্য বন্যপ্রাণী সম্পর্কিত তার লেখা বনদপ্তর কর্তৃক প্রশংসিত হয়েছে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments