জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, গুসকরা, পূর্ব বর্ধমান:- কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ঘটলেও শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা বা যেকোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় সত্ত্বেও গত কয়েক বছর ধরে নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ইতিমধ্যেই বাংলার মানুষের প্রশংসা আদায় করে নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানি লিমিটেডের আধিকারিক থেকে শুরু করে কর্মীরা। প্রখর সূর্যের তাপ, তীব্র হাড়কাঁপানি ঠাণ্ডায়, ঝড় বা বন্যার মত প্রাকৃতি বিপর্যয়ে অথবা সবাই যখন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সামাজিক উৎসবে মেতে ওঠে ওরা তখন সব ভুলে, মনের কষ্ট হৃদয়ে চেপে রেখে মানুষকে বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়ার জন্য ব্যস্ত থাকে। কোনো কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনে ‘ব্রেক ডাউন’ হলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঝড়, বৃষ্টি, বজ্রপাত মাথায় করে কার্যত সারারাত ধরে ওরা কাজ করতে ব্যস্ত। এত পরিশ্রমের বিনিময়ে বেতন ওদের যৎসামান্য এবং কাজ করতে গিয়ে শুনতে হয় কটু কথা, কখনো জোটে শারীরিক লাঞ্ছনা। ওরা রাজ্যের বিভিন্ন ‘পাওয়ার হাউস’ এর সঙ্গে যুক্ত চুক্তিভিত্তিক কর্মী।
দীর্ঘদিন অনাবৃষ্টি থাকার পর গত ৩১ শে জুলাই থেকে শুরু হয়েছে একটানা প্রবল বৃষ্টিপাত। ভারী ও অতিভারী বৃষ্টির দাপটে কোথাও কোথাও বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনে বিঘ্ন ঘটেছে। এখন শহর থেকে শুরু করে গ্রাম জুড়ে প্রায় প্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুৎ চালিত পাম্পের সাহায্যে জল তুলে ব্যবহার করা হয়। হস্তচালিত পাম্প প্রায় নাই। ফলে বিদ্যুৎ না থাকলে পানীয় জল থেকে শুরু করে গৃহস্থালির সমস্ত কাজ বন্ধ থাকে।
পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে ওরাও ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যায়।
এই দুর্যোগ পূর্ণ পরিস্থিতিতে গৃহস্থের বাড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার জন্য গুসকরা বিদ্যুৎ দপ্তরের চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের দেখা গেল বৃষ্টি মাথায় নিয়ে পোলের উপর উঠে কাজ করতে। জানা যাচ্ছে গত ১ লা আগস্ট গভীর রাত পর্যন্ত তারা কাজ করে গেছে। এভাবেই ওরা কাজ করে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যুৎ দপ্তরের এক অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক বললেন, সত্যিই ওদের বেতন। চাকরির ক্ষেত্রে যেমন ওরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে তেমনি কাজ করতে গিয়েও সাধারণ মানুষের হাতে অনেক সময় ওরা হেনস্থার শিকার হয়। ওদের পরিস্থিতির কথা সবার উপলব্ধি করা উচিত।
গুসকরা পুরসভার চেয়ারম্যান কুশল মুখার্জ্জী বললেন, বর্তমান যুগে আমাদের জীবনের অপরিহার্য অংশ হলো বিদ্যুৎ।এদের জন্যেই আমরা প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ পাচ্ছি। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও এরা কাজ করে চলেছে। ওরা সমাজের প্রকৃত বন্ধু। নিজ নিজ এলাকায় কাজ করতে যাওয়ার সময় দপ্তরের কর্মীদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য তিনি এলাকাবাসীর কাছে আবেদন করেন।।