সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ– বৃহস্পতিবার বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী পালন করল আসানসোল পুরনিগম ও পশ্চিম বর্ধমান জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর। দুটি পৃথক অনুষ্ঠানে স্মরণ করা হয় বিদ্রোহী কবিকে।
বিদ্রোহী কবির প্রয়াণ দিবস উপলক্ষ্যে আসানসোল পুরনিগম আসানসোলের জিটি রোডের পুরনো রামকৃষ্ণ আশ্রম মোড় এলাকায় কবির মূর্তির সামনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে আসানসোল পুরনিগমের চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়, আইনী উপদেষ্টা প্রাক্তন মেয়র পারিষদ রবিউল ইসলাম ও এস বীরেন অধিকারী সহ আসানসোল পুরনিগমের আধিকারিক ও কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সকলে কাজি নজরুল ইসলামের মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
চেয়ারম্যান তাঁর বক্তৃতায় এদিন বলেন, “কাজি নজরুল ইসলাম শুধু বাংলা বা ভারতের নয়, তিনি বাংলাদেশের জনপ্রিয় কবি ছিলেন। তাঁর লেখা কবিতায় বরাবর উঠে এসেছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা। ধর্ম-বর্ণের সকল বৈষম্য দূর করার কথা তিনি বলে গেছেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে কাজী নজরুল ইসলামের মতো মানুষের জীবন ও আদর্শ আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। প্রকৃত অর্থে তাঁর লেখার মাধ্যমে তিনি হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে বৈষম্য দূরীকরণে সাহায্য করেছেন। তার লেখায় তিনি সর্বদা মানবতাকে সর্বোচ্চ বলে আখ্যায়িত করেছেন।”
অন্যদিকে পশ্চিম বর্ধমান জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা আড্ডার সভা গৃহেও অনুষ্ঠিত হয় বিদ্রোহী কবির স্মরণে এক বিশেষ অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক এস পোন্নাবালাম, আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা আড্ডার চেয়ারম্যান কবি দত্ত সহ জেলার প্রশাসনিক আধিকারিক ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা সকলেই কাজী নজরুল ইসলামের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। পরে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে জেলাশাসক এস পোন্নাবালাম ও আড্ডার চেয়ারম্যান কবি দত্ত স্বাধীনতা আন্দোলনে কাজী নজরুল ইসলামের অবদানের কথা স্মরণ করে বলেন, “কাজী নজরুল ইসলামের লেখা স্বাধীনতা প্রেমিকদের উজ্জীবিত করেছিল, উৎসাহিত করেছিল ও ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহস যুগিয়েছিল। তিনি যে সংগ্রামের চেতনা জাগিয়েছিলেন, তার কোনো নজির নেই। এছাড়া কাজী নজরুল ইসলাম সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটা মূর্ত প্রতীক ছিলেন। তিনি এমন সব শ্যামা সঙ্গীত ও গান তৈরি করেছিলেন, যা আজও শ্রদ্ধা ও সম্মানের সঙ্গে গাওয়া হয়। আমাদের জন্য গর্বের বিষয় যে কাজী নজরুল ইসলাম পশ্চিম বর্ধমান জেলায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন।”