eaibanglai
Homeএই বাংলায়তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ইসিএলের কর্মী আধিকারিকদের উপর হামলার অভিযোগ

তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ইসিএলের কর্মী আধিকারিকদের উপর হামলার অভিযোগ

সন্তোষ কুমার মণ্ডল,রানীগঞ্জঃ- তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের এক নেতা ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে রানীগঞ্জে ইসিএলের কুনুস্তোরিয়া এরিয়ার অমৃতনগর কোলিয়ারিতে কর্মরত ৯ জন খনি আধিকারিক, কর্মী, ও নিরাপত্তা রক্ষীকে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠলো। ইতিমধ্যেই কোলিয়ারির তরফে অভিযুক্ত ওই শ্রমিক নেতা ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে রানীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

জানা গেছে, একটি অভিযোগের ভিত্তিতে ইসিএলের ভিজিলেন্স দপ্তর তৃণমূল পরিচালিত রানীগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তথা তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেতা যিনি আবার অমৃতনগর কোলিয়ারির কর্মী সেই মহঃ সাবিরের বিরুদ্ধে চাকরিতে নিয়োগের সময় জমা দেওয়া তাঁর জন্মগত শংসাপত্র বা সার্টিফিকেট নিয়ে তদন্ত শুরু করে। সেই সার্টিফিকেট সন্দেহজনক বলে মনে হওয়ার কারণে এপেক্স মেডিক্যাল বোর্ডের মাধ্যমে শারিরিক পরীক্ষা করে, তাঁর জন্মের দিন নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ইসিএল সূত্রে জানা গেছে মহঃ সাবিরের বাবাও এই কোলিয়ারিতে কাজ করতেন । তাঁর সার্ভিস রেকর্ডে সাবিরের জন্ম সাল ১৯৬৫ লেখা আছে । ২০০৩ সালে বাবার মৃত্যুর পরে পোষ্য হিসাবে চাকরিতে যোগ দেন সাবির । সেই সময় তিনি নিজেকে ঝাড়খণ্ডের একটি বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়া হিসাবে নথি জমা দিয়েছিলেন। সেই স্কুলের নথি অনুযায়ী ( এ্যাডমিট কার্ড ) ১৯৭৫ সালে সাবিরের জন্ম হয়েছে । যদিও তদন্ত করতে গিয়ে দেখা যায় রানীগঞ্জের একটি হাইস্কুল থেকে সাবির পড়াশোনা করেছেন। আর সেই স্কুলের নথি অনুযায়ী তার জন্ম ১৯৭৯ সালে । আর এইসব নথিকে গুরুত্ব দিয়ে ভিজিলেন্স দপ্তর থেকে তার শারিরিক পরীক্ষার পর সাবিরের জন্মের সাল নির্ধারণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় ‌। সেই মত নির্দেশিকাও জারি হয়। এর বছরখানেক পরে সাবির কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন । যদিও কলকাতা হাইকোর্ট প্রথমে ইসিএলের সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ জারি করে। পরে ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে হাইকোর্ট সাবিরের শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে জন্ম নির্ধারণের নির্দেশ বাতিলের আর্জি খারিজ করে। এরপর সাবির ডিভিশন বেঞ্চে এই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন জানায় । ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়কে বহাল রাখে। হাইকোর্টে মামলা খারিজ হয়ে যাওয়ার পরে ইসিএলের পক্ষ থেকে সাবিরকে পাঁচবার শারীরিক পরীক্ষা না করানোর জন্য কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হয় । যদিও তিনি সেই নোটিশ নিতে চাননি বলে অভিযোগ।

এরই মধ্যে গত বুধবার ২৮ আগষ্ট সকালে সাবির কাজে যোগ দিতে গেলে তাঁকে কাজে যোগ দিতে দেওয়া হয়নি । অভিযোগ এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে শখানেক অনুগামীকে নিয়ে সাবীর কার্যালয়ে‌ হামলা চালায়। এরপর অমৃতনগর কোলিয়ারির এজেন্ট উমেশ পণ্ডিত গত ২৯ আগষ্ট গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে রানীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগে তিনি পার্সোনাল ম্যানেজার , ম্যানেজার ও নিরাপত্তা আধিকারিক সহ মোট ৯ জন আধিকারিককে ধাক্কা মারা সহ নানাভাবে শারীরিকভাবে নিগ্রহ করা হয়েছে বলে জানান। এমনকি তাঁদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগে জানানো হয়।

প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য কয়েকদিন আগেই পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের সহসভাধিপতি তথা শ্রমিক সংগঠনের নেতা বিষ্ণুদেব নুনিয়ার বিরুদ্ধে কাজোড়ায় এরিয়ার কোলিয়ারির এক কর্মীকে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ সামনে আসে। যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। সেই ঘটনার জের কাটতে না কাটতে এবার ইসিএলের কুনুস্তোড়িয়া এরিয়ার অমৃতনগর কোলিয়ারিতে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলো। যা নিয়ে আরো একবার শাসক দলের শ্রমিক সংগঠন নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments