সন্তোষ মণ্ডল,আসানসোলঃ– টানা বৃষ্টি দোসর ঝোড়ো হাওয়া, এমনই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় রানিগঞ্জ শহরে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক ঘটনা। মাইনিং কলেজের পরিত্যক্ত ভবনের দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হলো দুই যুবকের। ঘটনাটি ঘটেছে রানিগঞ্জ থানার বল্লভপুর ফাঁড়ির সাহেবগঞ্জ মোড় সংলগ্ন এলাকায়। মৃতরা হলেন রানিগঞ্জ থানার কাঠগাদার বাসিন্দা সীতারাম বাউরি (২০) ও সাহেবগঞ্জের বাসিন্দা রাজীব দাস (১৯)। ঘটনাটি নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ লাকার বাসিন্দারা। কার গাফিলতিতে পরিত্যক্ত ভবনটি ভাঙা হয়নি তা তদন্ত করে দেখার দাবি জানিয়েছে এলাকালাসী।
জানা গেছে, রানিগঞ্জ থানার সাহেবগঞ্জ মোড় সংলগ্ন এলাকা ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজের জন্য বাড়ি ভাঙ্গার কাজ চলছে। বেশ কিছু বাড়ি ভাঙা হয়েছে। আর কিছু বাড়ি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তেমনই একটি মাইনিং কলেজ ভবন। শনিবার দুপুর দুটো নাগাদ সেই পরিত্যক্ত ভবনের একটি অংশর দেওয়াল ভেঙে পড়ে। তার তলায় বেশ কয়েকজন চাপা পড়েছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় রানিগঞ্জ থানার বল্লভপুর ফাঁড়ির পুলিশ ও উদ্ধারকারী দল। জেসিবি মেশিন দিয়ে বাড়ির ভাঙ্গাচোরা অংশ সরানোর কাজ শুরু হয়। ধ্বংসস্তুপ সরিয়ে বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ ইট বালির ভেতর থেকে অচেতন অবস্থায় দুই যুবককে উদ্ধার করা হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা দুজনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন। অন্যদিকে ওই ধ্বংসস্তুপের মধ্যে আর কেউ চাপা পড়ে আছে কি না, তা দেখার জন্য জেসিবি মেশিন দিয়ে সন্ধ্যে পর্যন্ত ধ্বংসস্তুপ পরিষ্কার করা হয়। কিন্তু আর কারো খোঁজ মেলেনি।
প্রসঙ্গতঃ, রানিগঞ্জের ওই এলাকায় ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারেই বাইপাস রোড নির্মাণের জন্য বেশ কিছুদিন ধরেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে। রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য সেখানের বাড়িঘর সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি পরিত্যক্ত ওই ভাঙা বাড়ির অংশে ওই যুবকেরা লোহার রড ও অন্য সামগ্রী সংগ্রহ করতে গিয়েছিল। তাদের আশঙ্কা সেই সময় ভাঙা ভবনের দেওয়াল ভেঙে পড়ে ও ওই যুবকেরা চাপা পড়ে যায়।
অন্যদিকে, এই ঘটনা নিয়ে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, দেওয়াল চাপা পড়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। রবিবার আসানসোল জেলা হাসপাতালে দুই যুবকের মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে।