সন্তোষ মণ্ডল, আসানসোলঃ– আসানসোলে একই দিনে দুই খনি এলাকায় ধসের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়াল। দুটি ঘটনাই ঘটেছে জনবসতি এলাকায়। ফলে রীতিমতো আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা। ধসের জন্য ইসিএল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে দ্রুত পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। যদিও পুনর্বাসন নিয়ে ইসিএলের তরফে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
দুটি ঘটনাই ঘটে শুক্রবার সকালে। এদিন সকালে আসানসোলের জামুরিয়া কেন্দা ফাঁড়ি এলাকার পড়াশিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত সংলগ্ন এলাকায় বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে প্রায় ৩০ ফুট গভীর ধসের সৃষ্টি হয়। ধস এলাকার প্রায় ১০ ফুট দূরত্বেই রয়েছে বেশ কয়েকটি বাড়ি। এবং ধসের ঠিক পাশেই রয়েছে একটি মোবাইল ফোন কোম্পানির টাওয়ার।
স্থানীয়দের দাবি এই এলাকাটিকে ১৯৯৬ সালে ধস কবলিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিলো। এরই মধ্যে গত পাঁচ বছরে প্রায় ৫-৬ বার ধসের ঘটনা ঘটেছে এলাকায়। যা নিয়ে বারবার ইসিএল কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরেও, আজ পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
অন্যদিকে অন্ডালের জামবাদ এলাকাতেও এদিন সকালে ধসের ঘটনা ঘটে। এদিন যে জায়গায় ধসের ঘটনা ঘটেছে তার থেকে ৫০ মিটার দূরে রয়েছে একটি শিশু শিক্ষা কেন্দ্র। স্বাভাবিক ভাবেই এদিনের ধসের ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি আতঙ্কিত হয়ে পড়েন পড়ুয়া ও তাদের অভিভাবকেরা। প্রসঙ্গত বছর কয়েক আগেই ঠিক এই জায়গা থেকে কিছুটা দূরে ধসের ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনায় আস্ত একটা বাড়ি মাটির নিচে চলে যায় এবং এক মহিলার মৃত্যু। সেই মৃতদেহ উদ্ধার করতে সময় লেগেছিল ৯ দিন। একই জায়গায় আবার ধসের ঘটনা ঘটায় রীতিমতো আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা।
খনি এলাকার মানুষের অভিযোগ ইসিএল কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও উদাসীনতার জন্যই বার বার ধসের ঘটনা ঘটছে। প্রসঙ্গত দুটি এলাকায় রয়েছে ভূগর্ভস্থ কয়লা খনি। খনির নিচে থেকে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে কয়লা বার করে নেওয়ার পর ইসিএল সেই এলাকাকে বালি দিয়ে ভরাট করে না বলে অভিযোগ। ইসিএল কর্তৃপক্ষ শুধু তাদের উৎপাদনের দিকটি মাথায় রাখেন। সাধারণ মানুষের সুরক্ষা বা নিরাপত্তার ব্যাপারে তাদের কোনো নজর নেই বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে ধস কবলিত এলাকার মানুষেরা পুনর্বাসনের দাবি জানালেও তা আজ পর্যন্ত কার্যকর হয়নি বলে অভিযোগ।