জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী -: সিবিআই তাদের চার্জশিটে প্রমাণ সহ যে তথ্যই আদালতে পেশ করুক তাতে কিন্তু বাম ও অতিবাম মতাদর্শে বিশ্বাসী একদল মানুষ কিছুতেই তাদের অন্ধ বিশ্বাস পাল্টাবে না। তাদের বিশ্বাস ঘটনার সঙ্গে একাধিক ব্যক্তি যুক্ত আছে এবং মূল দায়ী মমতা ব্যানার্জ্জী। এই বিশ্বাসের স্বপক্ষে তাদের হাতে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য থাকলে একজন সৎ নাগরিক হিসাবে সেগুলি সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিলেই ঝামেলা চুকে যায়। তাদের তথ্যহীন দাবি যে মূল ঘটনাকে পেছনে ফেলে দিচ্ছে সেটা সম্ভবত মাথায় নাই। ‘জাস্টিস ফর আরজি কর’-এর পরিবর্তে জুনিয়র ডাক্তাররা নিত্যনতুন দাবি তুলে সরকারকে ব্ল্যাকমেল করে চলেছে। এটা যে ‘থ্রেট কালচার’ এর অন্যরূপ সেটা তারা বুঝতে চাইছেনা।
আসলে পোস্টমর্টেম করার সময় তাদের উপস্থিতি ও দেওয়াল ভাঙা সংক্রান্ত বিষয়ে তাদের ভূমিকা সামনে আসতেই জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ চাপে পড়ে গ্যাছে। এবার অন্য কোনো তথ্য সামনে এলে তাদের সমূহ বিপদ। সরকারকে ব্ল্যাকমেল করা ছাড়া এই মুহূর্তে তাদের অন্য কোনো উপায় নাই।
তবে কোনো পরিস্থিতিতেই কর্তব্যরত ডাক্তারকে হেনস্থা করা কখনোই কাম্য নয়। এতে তাদের মধ্যে একটা ভীতি কাজ করবে এবং ক্ষতি হবে রুগীদের। তারপরও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বারবার জুনিয়র ডাক্তাররা ক্যানো হেনস্থার শিকার হয়? কর্তব্যে গাফিলতি? এটাও ঠিক তারাও মানুষ এবং মানুষ মাত্রই ভুল হয়। তাছাড়া একজন ডাক্তারের পক্ষে একটানা দীর্ঘ সময় ধরে ডিউটি করা কষ্টকর। এইসব নিয়ে ভাববার সময় হয়েছে।
হাসপাতালের চার দেওয়ালের মধ্যে নৃশংস ভাবে তরুণী পড়ুয়া চিকিৎসকের খুন হওয়া নিয়ে যেভাবে বাম ও অতিবাম ভাবধারায় বিশ্বাসী একদল রাজনীতিবিদ রাজনীতিকরণ করে প্রথম থেকেই বাংলাকে অশান্ত করে নিজেদের প্রাসঙ্গিক করার চেষ্টা করে যাচ্ছে সেটা খুবই নিন্দনীয়। উৎসবের মুখে তাদের কার্যকলাপ হাজার হাজার গরীব মানুষকে বিপদে ফেলছে সেটা তাদের মাথায় নাই। সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করা হয়েছে কাল্পনিক গল্প। বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করলেই নেমে আসছে কুৎসিত বাক্যবাণ। নিজেদের নার্সিংহোমের ব্যবসাকে বৃদ্ধি করার খেলায় মেতে উঠেছে ডাক্তার নামধারি একদল কসাই।
একই পথের পথিক হয়েছে একদল যারা নিজেদের সাংবাদিক হিসাবে দাবি করে। ‘সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে’ – বাক্য বন্ধনীর আড়ালে নিয়মিত মিথ্যা তথ্য পেশ করে সাংবাদিকতার মত মহান পেশাকে তারা কলুষিত করেছে। একদিন সাধারণ মানুষ সাংবাদিকদের সম্ভ্রমের চোখে দেখত আজ দু’একজনের জন্য সমগ্র সাংবাদিককুলকে ঘৃণার চোখে দ্যাখা হচ্ছে। এটা নিয়ে দেশের সমস্ত সাংবাদিক সংগঠনের ভাববার সময় হয়েছে।
অতিরিক্ত চার্জশিট জমা পড়লে আর কেউ জড়িত আছে কিনা জানা যাবে। কিন্তু আপাতত আশাকরা যায় রাজ্যের পুলিশ বাহিনীকে যারা দলদাস ও অযোগ্য বলে চিৎকার করে সিবিআই তদন্তের দাবি করছিল এবার তারা তাদের মন্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইবে। ব্ল্যাকমেলিংয়ের রাজনীতি বন্ধ করে জুনিয়র ডাক্তাররা নিত্যনতুন দাবির পরিবর্তে অপরাধীর শাস্তির দাবির পাশাপাশি নিজেদের নিরাপত্তা দাবিতে দৃঢ় থাকবে। সবার সুমতি হোক।
সুস্থ নাগরিক সমাজ অপরাধীর শাস্তি দাবি করছে, গল্প নয়।