সঙ্গীতা চৌধুরীঃ- বাস্তব জীবনের নানা সমস্যার সমাধান পাওয়া যায় ধর্মীয় কথার মধ্যে দিয়ে। আসলে ধর্ম মানুষকে শেখায় কীভাবে জীবন যাপন করা উচিত, অনেক সময় দেখা যায় মা কাকিমাদের থেকে শুনে বড় হওয়া ধর্ম এবং আমাদের বড় হয়ে ওঠার পর বাস্তবিক জীবনের ধর্মের মধ্যে একটা বড় গোলযোগ সৃষ্টি হচ্ছে, তখন দুয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করাটাই একটা বিশাল বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়, কেউ কেউ এক্ষেত্রে ধর্মকে পুরোপুরি ত্যাগ করে নানান রকম অন্যায় কার্যকলাপ এবং ব্যভিচারে লিপ্ত হয়ে ওঠেন। কিন্তু প্রকৃত ধার্মিক জীবন যাপনের মধ্য দিয়েই একজন মানুষ সৎ হয়ে উঠতে পারে আমাদের পুরাণ থেকে শুরু করে নানা মহাপুরুষ এই কথাই বলেছেন।
এই প্রসঙ্গে এক ভক্তের প্রশ্নের উত্তরে স্বামী সোমেশ্বরানন্দ মহারাজ বলেছেন, “ছোটবেলায় মা’র কাছে যা শিখেছিলেন, করে যান। আর যে পরিবর্তন এসেছে যুক্তি ও প্রয়োগ পরীক্ষা ক্ষেত্রে, সেটাও সঙ্গে রাখুন। বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ধর্মকে দেখা যায়, নানা পথ দিয়ে তীর্থযাত্রা করতে পারেন। আমিও এটা করি। একদিকে ধ্যানের মাধ্যমে ধর্মের রহস্যে বোঝা। অন্যদিকে ইতিহাস, সমাজবিদ্যা, মনোবিজ্ঞান ইত্যাদি আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞানের মাধ্যমে ধর্মকে বোঝা। দিব্যত্রয়ী (ঠাকুর মা স্বামীজি) কেন এসেছিলেন, ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে যুগ সমস্যাকে দেখে তাদের কর্মপদ্ধতি বুঝতে চেয়েছি। আবেগে নয়, যৌক্তিক ও action-oriented করতে চেষ্টা করেছি নিজের জিজ্ঞাসাকে। বর্তমানে ধর্মের প্রয়োগ নিয়ে ভেবেছি। দেশে ও বিশ্বে কি চলছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তা দেখার চেষ্টা করেছি নিজের চোখে, practical research-এর মাধ্যমে। নানা বিষয়ে মানুষের বিশ্লেষণ, কর্মপদ্ধতি, এবং সমস্যা দেখতে চেয়েছি। মনে হয়েছে তাদের ভাষায় কথা বলতে হবে, তাদের যুক্তিপদ্ধতিতে উপস্থাপনা করতে হবে আমার বক্তব্য। এজন্য পরীক্ষা প্রয়োগের মাধ্যমে case-study তৈরি করেছি অনেক। পরে বিভিন্ন মঞ্চে রেখেছি এসব। গড়ে তুলেছি অনেক গ্রুপ, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে, ধর্মের এই বাস্তব সামাজিক প্রয়োগ ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে। ধর্ম তো মানুষের জন্য। শুধু নিজের জন্য নয়, সমাজের জন্য আরও বেশি।” এরপর মহারাজ বলেছেন , ধর্মকে নানা দিক থেকে বিবেচনা করে তারপর নিজের করনীয় কার্যকে ঠিক করতে হবে।