সৌভিক সিকদার, গণপুর, পূর্ব বর্ধমান-: সহ-শিক্ষক হিসাবে শিক্ষক জীবন শুরু হয়েছিল সেই ১৯৮৯ সালে। প্রধান শিক্ষক হন ২০০৫ সালের জানুয়ারি মাসে। অবশেষে সরকারি নিয়ম মেনে গত ৩১ শে অক্টোবর মঙ্গলকোটের গণপুর উচ্চ বিদ্যালয় (উ:মা:) থেকে অবসর নেন দুর্গাপ্রসন্ন গোস্বামী। সঙ্গে সঙ্গে অবসান ঘটল শিক্ষক হিসাবে একটানা ৩৬ বছরের বর্ণময় কর্মজীবনের। পেছনে ফেলে এলেন বহু সুখ-দু:খের স্মৃতি।
প্রসঙ্গত ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রধান শিক্ষক হিসাবে দুর্গাপ্রসন্ন বাবু গণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগ দেন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই করোনা জনিত কারণে দেশের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ও বন্ধ থাকে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তিনি নিজের কর্মদক্ষতা প্রমাণের সুযোগ পান।
অবসর আগে নিলেও বিদ্যালয়ের সমস্ত শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী ও ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতিতে ১১ ই নভেম্বর বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিদায়কালীন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীরা কবিতা পাঠ ও সঙ্গীত পরিবেশনের পাশাপাশি প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করে। বিদ্যালয় ও ছাত্রছাত্রীদের পক্ষ থেকে তার হাতে উপহার তুলে দেওয়া হয়।
অন্যদিকে দুর্গাপ্রসন্ন বাবু তার বক্তব্যে এই বিদ্যালয়ে থাকাকালীন স্বল্প সময়ের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। সহযোগিতার জন্য সহকর্মীদের পাশাপাশি, অভিভাবক ও ছাত্রছাত্রীদের তিনি ভূয়সী প্রশংসা করেন। প্রত্যেকের কাছে তিনি বিদ্যালয়ের সম্মান আরও উঁচুতে তুলে ধরার জন্য আহ্বান জানান। সেইসময় আবেগে তার কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে আসে, চোখের কোণ দিয়ে দু’ফোটা জল গড়িয়ে পড়ে।
একান্ত সাক্ষাৎকারে বিদ্যালয়ে থাকাকালীন নিজের সাফল্য ও ব্যর্থতা তিনি তুলে ধরেন। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় সমস্ত ছাত্রছাত্রীর উত্তীর্ণ হওয়াকে তিনি সমবেত সাফল্য বলে মনে করেন। কিন্তু সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয়মুখী করতে না পারাকে তিনি ব্যক্তিগত ব্যর্থতা হিসাবে গণ্য করেন। নিজ নিজ সন্তানরা যাতে নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসে সেটা নিশ্চিত করার জন্য তিনি অভিভাবকদের অনুরোধ করেন।