সঙ্গীতা মুখার্জ্জী মণ্ডল, দুর্গাপুর, পশ্চিম বর্ধমান- রঙিন মায়াবী আলোর ঝলকানির পরিবর্তে পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের সুপরিচিত ডাক্তার দম্পতির একমাত্র কন্যা ‘প্রাপ্তি’ অনুস্মিতার জন্মদিন পালিত হলো ভিন্ন আঙ্গিকে, চারদেওয়ালের বাইরে, সবার মাঝে। এভাবেই গত বারো বছর ধরে ডা. উদয়ন চৌধুরী ও ডা. কবিতা বর্মণ চৌধুরী তাদের একমাত্র সন্তানের জন্মদিন পালন করে চলেছেন। তেরোতম জন্মদিনেও তার কোনো ব্যতিক্রম ঘটলনা।
গত ১০ ই নভেম্বর ছিল একমাত্র কন্যা অনুস্মিতা ওরফে মা-বাবার আদরের প্রাপ্তির তেরোতম জন্মদিন। ডাক্তার দম্পতির সৌজন্যে এলাকাবাসী একটু অন্যরকম পরিবেশের সাক্ষী থাকার সুযোগ পেল।দুর্গাপুর কালীগঞ্জ ‘সৃজনী’ গেস্ট হাউস কেক কাটার পাশাপাশি রক্তদান শিবির, ‘ছোঁয়া’-র প্রায় ১৫০ টি শিশুর হাতে নতুন স্কুলব্যাগ প্রদান, বেশ কিছু বিশেষ ভাবে সক্ষম ও মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি প্রদান, শহরের কয়েকটি সরকারি স্কুলকে খেলার সামগ্রী প্রদান সহ একাধিক সমাজ কল্যাণমূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সন্তানের জন্মদিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য জন্মদিনের সকালে একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। দুর্গাপুরের একটি ব্লাড ব্যাংক শাখার সহযোগিতায় শিবির থেকে মোট ২৫ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করা হয়। রক্তদাতাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন মহিলা ছিলেন। সংগৃহীত রক্ত সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দুর্গাপুরের প্রাক্তন মেয়র অনিন্দিতা মুখার্জী, উপস্থিত আসানসোলের ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটক, দুর্গাপুর পুরসভার প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য দীপঙ্কর লাহা, রাখি তিওয়ারি সহ বিভিন্ন সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষিকা এবং শহরের বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি।
প্রসঙ্গত চিকিৎসার পাশাপাশি মানুষের সেবার জন্য ডাক্তার দম্পতি ‘উত্তিষ্ঠিত জাগ্রত জাগো নারী’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্হা গড়ে তুলেছেন। অসহায় শিশুদের প্রতিভা বিকাশের জন্য ‘ছোঁয়া’ প্রকল্প গড়ে তুলেছেন। লক্ষ্য ধীরে ধীরে গোটা রাজ্য জুড়ে সেবার কাজ ছড়িয়ে দেওয়া।
ছোট্ট অনুস্মিতার বক্তব্য – আমারও লক্ষ্য মা-বাবার দেখানো পথ ধরে এগিয়ে যাওয়া এবং সবার পাশে দাঁড়ানো। এরজন্য সবার আগে নিজেকে উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে হবে। মা-বাবা সহ সবার আশীর্বাদ মাথায় নিয়ে আমি সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি।ছোট্ট মেয়েটার আন্তরিকতা পূর্ণ প্রতিটি শব্দ সবার হৃদয় ছুঁয়ে যায়।
উদয়ন বাবু বললেন- সবার মাঝে আমাদের সন্তানের জন্মদিন পালন করে একটা আলাদা তৃপ্তি পাই। দামি পার্থিব উপহার সামগ্রীর পরিবর্তে সবার আশীর্বাদ বেশি মূল্যবান।
একই কথা বললেন কবিতা দেবী। তার বাড়তি সংযোজন – আমাদের সন্তানও যেন সবার পাশে দাঁড়ায়।