জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, কলকাতা –: যেকোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে রজত জয়ন্তী, সুবর্ণ জয়ন্তী বা প্লাটিনাম জয়ন্তী একটা আলাদা তাৎপর্য বহন করে আনে। সেটা কোনো জাতির বসতি স্থাপনের দিবস হলে সেই তাৎপর্যের মাধুর্য আকাশে বাতাসে ছড়িয়ে যায়। উৎসব পরিণত হয় পুনর্মিলন উৎসবে। বয়স অনেক কিছু কেড়ে নিলেও মুহূর্তের জন্য নবীনদের পাশাপাশি প্রবীণরা শিশুসুলভ আনন্দে মেতে ওঠেন। সব মিলিয়ে এক অসাধারণ পরিবেশের সাক্ষী থাকার সুযোগ পায় প্রত্যেকে। সেই দৃশ্য দ্যাখা গ্যালো আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে।
ঠিক ৭৫ বছর আগে ১ লা ডিসেম্বর আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বসতি স্থাপন করেছিল বাঙালিরা। মহাসমারোহে BAANI অর্থাৎ ‘বেঙ্গল অ্যাসোসিয়েশন অফ আন্দামান অ্যান্ড নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ’ এর উদ্যোগে গত আট বছর ধরে বসতি স্থাপনের দিনটি পালন করে আসা হচ্ছে। প্লাটিনাম জয়ন্তী বর্ষকে স্মরণীয় করে তোলার জন্য গত ১ লা ডিসেম্বর সংস্থাটির পক্ষ থেকে যথাযোগ্য মর্যাদা সহকারে ৮ তম বঙ্গ-মহাসম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সকাল ৯ টা থেকে শুরু হওয়া এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি চলে রাত ৮ টা। কার্যত দ্বীপজুড়ে বসবাসকারী সমস্ত বাঙালিররা এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য হলো
এখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসবাসকারী বাঙালিদের একত্রিত করে তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকারকে সম্মান জানানো। পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে সমস্যাগুলি চিহ্নিত করে সেগুলি সমস্যাগুলি সমাধান ও মোকাবিলার চেষ্টা করা।
মহাসম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বন্দর, নৌপরিবহন ও জলপথের প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর, স্থানীয় সাংসদ বিষ্ণুপদ রায় সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি। তারা উপস্থিত বঙ্গপ্রেমীদের সামনে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ব্যাপারে মূল্যবান বক্তব্য পেশ করেন। এছাড়াও অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যাক্তিরা বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি বিষয়ে তাঁদের মূল্যবান বক্তব্য রাখেন।
উপস্থিত ছিলেন BAANI-র সভাপতি ডা. রাধাকান্ত হালদার, সম্পাদক জহরলাল দাস ও শুভাকাঙ্ক্ষী অংশুমান রায়। তারা প্রত্যেকে এখানে বসবাসকারী বাঙালিদের অতীত ও বর্তমান অবস্থা তুলেধরেন এবং কিভাবে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির উৎকর্ষ সাধন করা যায় সে বিষয়ে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।