নীহারিকা মুখার্জ্জী চ্যাটার্জ্জী, ফলতা, দক্ষিণ ২৪ পরগণা-: অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে যখন একরাশ অভিযোগ উঠছে তখন দীর্ঘদিন ধরে পাঠদান থেকে শুরু করে সৌন্দর্যায়ন, বিদ্যালয়ের শিশুদের জন্মদিন পালন, ইলিশ উৎসব, দুর্গাঠাকুর দর্শন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রেই বৈচিত্র্যের পরিচয় দিয়ে চলেছে বিখ্যাত বাঙালি বৈজ্ঞানিক আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসুর স্মৃতিধন্য দক্ষিণ ২৪ পরগণার ফলতা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়।
এতদিন ওদের পৃথিবী ছিল ‘খিড়কি থেকে সিংহদুয়ার’। অন্যরা যখন শীতকালে বেড়াতে যায়, ওরা তখন আড়ালে বসে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। যেখানে দু’বেলা সন্তানদের মুখে দু’মুঠো খাবার তুলে দিতে ওদের গরীব মা-বাবা হিমশিম খায় সেখানে সন্তানদের নিয়ে বেড়াতে যাওয়াটা ছিল দুঃস্বপ্ন, বিলাসিতা। ফলে ওদের মনের মধ্যে একটা আফসোস থেকেই গিয়েছিল। সেই আফসোস দূর করার জন্য এবারও ওদের জন্য শিক্ষামূলক ভ্রমণের আয়োজন করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সহ অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উদ্যোগে গত ১৮ ই ডিসেম্বর দুটি রিজার্ভ বাসে চেপে চতুর্থ শ্রেণীর সমস্ত শিক্ষার্থী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবক, রন্ধন কর্মী সহ মোট ৯২ জনের একটি দল মহানন্দে বেরিয়ে পড়ে শিক্ষামূলক ভ্রমণে। এবার ওদের গন্তব্যস্থল ছিল পাথরপ্রতিমার ভগবতপুরের কুমির প্রকল্প। সেখানে পৌঁছে কুমির দেখে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে শিশুরা। শুধু ভ্রমণ নয় ওদের জন্য টিফিন ও মধ্যাহ্নভোজনেরও ব্যবস্থা করেছিল বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তিলক নস্কর বললেন – ওদের মনস্তত্ত্ব আমরা ভালভাবেই বুঝতে পারি। ওদের অবচেতন মনের সুপ্ত ইচ্ছে পূরণ করার জন্য শিক্ষামূলক ভ্রমণের আয়োজন করলাম। ওদের মুখের সরল ও পবিত্র হাসি আমাদের সবচেয়ে বড় প্রাপ্য ।