সঙ্গীতা চৌধুরীঃ- একবার একজন ভক্ত স্বামী সোমেশ্বরানন্দ মহারাজকে বলেছিলেন, “জীবনে আমরা এতো দুঃখ পাই কেন?” তার উত্তরে মহারাজ বলেন, “জীবনে সুখ দুঃখ দুইই রয়েছে। কিন্তু যদি দুঃখকেই মনে রাখি তবে এমন হবেই।” মহারাজ সুখ দুঃখ প্রসঙ্গে আরও বলেন, “জীবনের গোলাপ গাছে ফুলের সাথে কাঁটাও যে থাকে, সে-কথা ভুলে যাই আমরা। শুধু নিজের দুঃখ নিয়ে এতো ব্যস্ত যে সমাজের অনাচার ও মানুষদের কষ্ট নিয়ে আমরা অনেকটা উদাসীন। ফলে নিজের দুঃখকে বেশি গুরুত্ব দিই এবং এভাবে স্বার্থপর সমাজ গড়ে উঠছে। আমি যেহেতু অন্যের পাশে দাঁড়াই না, অন্যরাও আমার বিষয়ে উদাসীন। জীবনে যদি কোনো মহান আদর্শ না থাকে তবে মানুষ নিজের ছোটছোট দুঃখ নিয়ে কাতর হয়ে পড়ে।”
এছাড়া মহারাজ আরও বলেন যে, মানসিকতার জন্য দুঃখ আসে মানুষের জীবনে। মহারাজের কথায়, “নেতিবাচক মানসিকতা নিয়ে আসে দুঃখ। এই মানুষ নিজেকে তো কষ্ট দেয়ই, অন্যদেরও দুঃখ দেয়। আশাবাদী মানুষ ইতিবাচক চিন্তার ফলে উজ্জ্বল দিকটা দেখে, নিরাশাবদী লোক দেয় শুধু অজুহাত ও অভিযোগ। সমস্যার মধ্যে অন্য বিকল্প পথ, নতুন সমাধান, আত্মবিকাশের সুযোগ খুঁজে বের না করতে পারলে মানুষ দুঃখে পড়ে। সাধারণ মানুষের কাছে অসাধারণ ব্যবহার আশা করলে দুঃখ বাড়ে। হতাশা, ব্যর্থতা, কষ্ট ইত্যাদি হলো সমস্যা। মানুষ সাধারণত সমস্যা নিয়েই চিন্তিত থাকে এজন্যই দুঃখ। সমস্যা নয়, সমাধানের,উপর জোর,দিতে হবে।”
মহারাজ আরও বলেন যে কতগুলো জিনিস আমরা মানতে পারি না বলেই আমাদের দুঃখ বোধ হয় এত বেশি। মহারাজ বলেন, “সমাজে ভাল লোকের মতো মন্দ লোকও আছে, মানুষের মনের ওঠা নামা রয়েছে, মৃত্যু সংগ্রাম বিচ্ছেদ আছে, এ কথা অনেকে মেনে নিতে পারে না। ফলে দুঃখ।”