eaibanglai
Homeএই বাংলায়আসানসোলে ডিজিটাল অ্যারেস্টে ১কোটি ৩ লক্ষ টাকা খোয়ালেন ব্যক্তি, ধৃত ৯

আসানসোলে ডিজিটাল অ্যারেস্টে ১কোটি ৩ লক্ষ টাকা খোয়ালেন ব্যক্তি, ধৃত ৯

সন্তোষ কুমর মণ্ডল,আসানসোলঃ– ডিজিটাল অ্যারেস্টের ঘটনার তদন্তে নেমে বড়সড় সাফল্য পেলো আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের আসানসোল সাইবার থানা। ঘটনায় এক মহিলা সহ ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে তিনজন দিল্লির বাসিন্দা। আসানসোল সাইবার থানার বিশেষ দল দিল্লি থেকেই তাদের গ্রেফতার করে। দুজন উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দাকে ধরা হয়েছে কলকাতার একটি হোটেল থেকে। বাকি ৪ জন কলকাতার নিউটাউন, দক্ষিণ ২৪ পরগণার জগদ্দল, ভাটপাড়া ও হরিদেবপুরের বাসিন্দা। ধৃতদের কাছ থেকে পুলিশ ১১ টি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, তিনটি এটিএম কার্ড, একটি ক্রেডিট কার্ড ও বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাঙ্কের একাধিক চেকবই পাওয়া গেছে। শনিবার এক সাংবাদিক বৈঠক করে পুরো বিষয়টি জানান ডিসিপি ( হেডকোয়ার্টার) আরবিন্দ কুমার আনান্দ।

জানা গেছে গত ১৮ জানুয়ারি আসানসোল সাইবার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন আসানসোল দক্ষিণ থানা এলাকার বাসিন্দা চঞ্চল কুমার বন্দোপাধ্যায়। অভিযোগে তিনি জানান, গত ১০ জানুয়ারি থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত সাইবার অপরাধীরা তাকে ” ডিজিটাল এ্যারেস্ট” করে রেখেছিলো। ১০ জানুয়ারি এক ব্যক্তি চঞ্চলবাবুকে অডিও কল করে বলে, একটি বহুজাতিক কুরিয়ার কোম্পানির মাধ্যমে তার আধার কার্ড ব্যবহার করে বেআইনি পার্সেল পাঠানো হয়েছে। তাতে তিনি গ্রেফতার হতে পারেন। এরপর তাকে দিল্লির সাইবার থানা ও সিবিআইয়ের ভয় দেখিয়ে একাধিকবার অডিও ও ভিডিওকল করা হয় এবং ১ কোটি ৩ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারকরা।

অভিযোগ পেয়ে সাইবার থানা বিশেষ দল তৈরি করে। তদন্তকারী অফিসার বা আইও ছাড়াও সেই দলের নেতৃত্বে ছিলেন এসিপি ( সাইবার) বিশ্বজিৎ নস্কর ও সাইবার থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়। এরপর চঞ্চলবাবুর ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট নেওয়া হয়। তা খতিয়ে দেখা যায় শিলিগুড়ির একটি ব্যাঙ্কে সেই টাকা ট্রান্সফার হয়েছে। ব্যাঙ্ক কতৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই একাউন্ট হোল্ডারের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সেখান থেকে
মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে ও টেকনিকালি সাপোর্ট নিয়ে প্রথমে কলকাতার নিউটাউন থেকে বেদ আনন্দ নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর একে একে জগদ্দল থেকে বিশ্বঞ্জয় কুমার, কলকাতার একটি হোটেল থেকে নবজিৎ সিং ও যতীন শর্মা, হরিদেবপুর থেকে সুপ্রীতি চৌধুরী ও ভাটপাড়া থেকে রসিদ খানকে গ্রেফতার করা হয়। তাদেরকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করে দিল্লির বাসিন্দা সুনীল কুমার, নিখিল রোহোত্যাগী ও প্রতীক বালচন্দ বাগাসকে গ্রেফতার করে ট্রানজিট রিমান্ডে নেওয়া হয়।

এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে ডিসিপি অরবিন্দ কুমার আনন্দ জানান, তদন্তে ইতিমধ্যেই সাইবার প্রতারকদের ৪০ টির মতো অ্যাকাউন্টের খোঁজ পাওয়া গেছে। তারমধ্যে নয়টি একাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। এবং ধৃত বেদ আনন্দ ও বিশ্বঞ্জয় কুমারের অ্যাকাউন্ট থেকে যথাক্রমে ৩ কোটি ও ১২ কোটি টাকার লেনদেনের হদিশ পাওয়া গেছে। এরা মুলতঃ বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট প্রতারকদের দিতো। ধৃত সুপ্রীতি চৌধুরী ও রশিদ খান বিদেশে থাকা তাদের সহযোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতো। একইভাবে দিল্লি থেকে গ্রেফতার হওয়া সুনীল ও প্রতীক ভারতবর্ষের বিভিন্ন জায়গা থেকে অ্যাকাউন্ট কালেক্ট করে চিন, দুবাই, নেপাল ও সাউথ ইস্টের বিভিন্ন দেশে থাকা তাদের সহযোগীদের দিতো।

দিল্লি থেকে ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে আসানসোলের প্রথম ডিজিটাল অ্যারেস্টের এই ঘটনারর দ্রুত কিনারা করতে চাইছে আসানসোল সাইবার থানা।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments