সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ- মহা কুম্ভের কথা শুনে স্মৃতি ফিরে পেলেন প্রৌঢ়। ফিরে পেলেন ১৫ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া পরিবার। এমনই আশ্চর্যজনক ঘটনাটি ঘটেছে রানীগঞ্জে।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানা যায় ১৫ বছর আগে স্মৃতিভ্রংশ হয়ে হারিয়ে গিয়েছিলেন কলকাতা মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের পার্ক সার্কাস এলাকার সাফাই কর্মী প্রকাশ মাহাতো ওরফে অর্জুন। সবকিছু ভুলে তিনি পৌঁছে গিয়েছিলেন রানীগঞ্জের রানীসায়ের এলাকায়। তার পর থেকে রানীসায়ের মোড়েই এক হোটেলে কাজ করতে থাকেন তিনি। সবকিছুর সাথে নিজের নামও ভুলে গিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। ফলে সকলে তাকে পালোয়ান নামে ডাকতে থাকে। ওই হোটেলেই পালোয়ানের কেটে যায় দীর্ঘ ১৫ টা বছর। এরই মধ্যে গত বুধবার হোটেল মালিক সুমিত গুপ্তা ওই ব্যক্তিকে জানান মহাকুম্ভে স্নান করতে নিয়ে যাবেন তাঁকে। ফেরার পথে তাকে তাঁর বাড়ি পৌঁছে দেবেন তাই বাড়ির ঠিকানা জিজ্ঞেস করেন। সুমিতবাবুর দাবি এরপরই গড় গড় নিজের বাড়ি, গ্রাম, জেলা সহ সমস্ত ঠিকানা এমনকি বাড়ির পরিবারের সদস্যদের নামও জানাতে থাকে সে। পালোয়ান জানান তাঁর বাড়ি ঝাড়খণ্ডের কোডারমা জেলায়। থানা মারকাচ্ছো আর গ্রামের নাম কদডিহি। সমস্ত তথ্য নিয়ে সুমিতবাবু পাঞ্জাবী ফাঁড়ির দ্বারস্থ হলে পুলিশ সাহায্য়ের হাত বাড়িয়ে দেয় এবং সেই তথ্যের সূত্র ধরে খোঁজখবর করতেই পরিবারের খোঁজ মেলে। এরপরই সুমিতবাবু পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন ও স্থানীয় সমাজসেবী সাধন সিংহের সহায়তায় তাঁদের ডেকে পাঠান ও পালোয়ান ওরফে প্রকাশ মাহাতোকে পরিবারের হাতে তুলে দেন।
প্রৌঢ়র স্ত্রী গীতা দেবী তাঁর ভাই জেঠু মাহাতো সহ পরিবারের অন্যান্যরা প্রকাশ মাহাতোকে ফিরে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েন। অন্যদিকে স্মৃতি ফিরে পরিবারের সকলকে চিনতে পারেন প্রকাশ এবং পরিবারের সঙ্গে ফিরে যান।
ঘটনায় রীতিমত চমকৃত হোটেল মালিক সুমিতবাবু সহ এলাকাবাসী। মহাকুম্ভের নামে যে কেউ স্মৃতি ফিরে পেতে পারে, পরিবার ফিরে পেতে পারে যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না তাঁদের। আগামী দিনে অর্জুনের জীবন সুন্দর হয়ে উঠুক সেই কামনা করেই বৃহস্পতিবার তাঁকে বিদায় জানান সকলে। মাঝে মাঝে এলাকায় ঘুরে যাওয়ার আমন্ত্রণও জানিয়ে রাখেন এলাকাবাসী। কিছু দিনের মধ্যেই এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গেই প্রয়াগ রাজে মহাকুম্ভে স্নান করতে যাওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে পালোয়ান ওরফে অর্জুনের।





