সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ– পশ্চিম বর্ধমানের তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর প্রয়াত বাবার নাম রয়েছে ভোটার তালিকায়। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভার ভোটার তালিকার একটি পার্ট জনসমক্ষে এনে এমনটাই দাবি করলেন।
প্রসঙ্গত সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রীমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার কর্মীসভায় রাজ্যের ভুয়ো ভোটার ইস্যুতে সরব হয়েছিলেন। তিনি দাবি করেছেন দিল্লি, হরিয়ানায় ভুয়ো ভোটারের জন্য বিজেপি জয়লাভ করেছে। এ রাজ্যেও সেই চক্রান্ত চলছে এবং সেই সভা থেকেই দলীয় নেতা ও কর্মীদেরকে ভুয়ো ভোটার চিহ্নিত করার নির্দেশ দেন।
সেই নির্দেশের পরই তৎপরতা শুরু করে দেয় পশ্চিম বর্ধমানের তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী ভুটো ভোটার ধরতে দলীর নেতৃত্বদের নিয়ে একাধিক বৈঠক করেন। এমনকি তিনি নিজেও মাঠে নেমে পড়েন ও পাড়ায় পাড়ায় ভুয়ো ভোটারের খোঁজ শুরু করেন।
এরই মধ্যে গত রবিবার বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় খোদ তৃণমূল জেলা সভাপতির প্রয়াত বাবার নাম ভোটার তালিকায় রয়েছে বলে দাবি করে জেলা সভাপতি ও শাসক দলের অস্বস্তি বাড়িয়ে দেন। তিনি জানান পশ্চিম বর্ধমান জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি নরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তীর বাবা স্বর্গীয় অরিন্দম চক্রবর্তী দু’বছর আগে মারা গেলেও ভোটার তালিকায় তাঁর নাম রয়েছে। ২৭৫ পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভার ৮৭ নম্বর পার্টের ১১৭ নম্বরে। ওই পার্টের ১১৮ নম্বরে রয়েছে বিধায়ক তথা জেলা সভাপতির নাম। এরপর তিনি কটাক্ষের সুরে বলেন, “কিছুদিন আগে পাণ্ডবেশ্বর বিধায়ক তথা পশ্চিম বর্ধমান জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি নরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী কর্মীসভায় কর্মীদের বলেছিলেন ভূয়ো ভোটার ধরতে এবং তাদের হাত পা ভেঙে দিতে। অথচ তাঁর প্রয়াত বাবার নাম রয়েছে ভোটার তালিকায়। এবার তিনি কার হাতপা ভাঙবেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি বলবেন?”
বিজেপি রাজ্য নেতার এই দাবি একদিকে যেমন তৃণমূল নেতৃত্বের অস্বস্তি বাড়িয়েছে অন্যদিকে তেমনি শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিষয়টি নিয়ে নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তাঁর কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। যদিও এই প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন বলেন, “যতদূর জানি জেলা সভাপতি ইতিমধ্যেই তাঁর স্বর্গীয় বাবার নাম ভোটার তালিকা থেকে কাটার জন্য নিয়ম মেনে আবেদন করেছেন। সেই কাজ তো নির্বাচন কমিশন করবে। আশা করি, এরপরে সংশোধনী তালিকায় তা করা হবে।” পাশাপাশি বিজেপি নেতার বক্তব্য নিয়ে তাঁর দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচন কমিশনের কারসাজি ধরে ফেলে, তা জনসমক্ষে এনেছেন। তাই বিজেপি নেতারা কি করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না।





