জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, আউসগ্রাম, পূর্ব বর্ধমান-: শীতকালে পর্ণমোচী বৃক্ষের পাতা ঝরে পড়ে গাছের নীচে চারপাশে ছড়িয়ে থাকে। অজ্ঞতা বশত বা ইচ্ছাকৃতভাবে সেই শুকনো পাতায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সেই আগুনের তাপে জঙ্গলের হাজার হাজার বৃক্ষের পাশাপাশি অবলা বন্যপ্রাণীরা পুড়ে মারা যায়। শীতের শেষ লগ্নে আউসগ্রাম, অযোধ্যা পাহাড়ের জঙ্গল সহ বিভিন্ন জঙ্গলে এই দৃশ্য খুবই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। আউসগ্রামের অদুরিয়া বনদপ্তর, ছোড়া পুলিশ ফাঁড়ি ও স্থানীয় বন্যপ্রেমীদের পক্ষ থেকে বারবার মানুষকে সচেতন করা সত্ত্বেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছেনা। কয়েকদিন আগেই আউসগ্রামের আদুরিয়া জঙ্গলে ভয়াবহ আগুনে বহু গাছ পুড়ে যায়। স্থানীয়দের আশঙ্কা বনে থাকা ময়ূর সহ অন্যান্য বন্যপ্রাণী এই আগুনে পুড়ে মারা যেতে পারে। এবার মানুষকে সচেতন করার জন্য বিকল্প পথ বেছে নিল বনদপ্তর।
বিশ্ব অরণ্য দিবস উপলক্ষ্যে আউসগ্রামের অদুরিয়া বনদপ্তরে উদ্যোগে এবং ছোড়া পুলিশ ফাঁড়ি ও স্থানীয় বন্যপ্রেমীদের সহযোগিতায়এবং অকুলিয়া যৌথ বন পরিচালন কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে প্রজেক্ট ময়দানে একটি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচির অঙ্গ হিসাবে মেহগনি, কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, আকাশমনি ইত্যাদি ২৬ টি বৃক্ষরোপণ করা হয়। জানা যাচ্ছে এই কর্মসূচি ধারাবাহিকভাবে চলবে।
তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন অদুরিয়া বনদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক পিনাকী ভট্টাচার্য, ছোড়া পুলিশ ফাঁড়ির ওসি ত্রিদিব রাজ, অকুলিয়া যৌথ বন পরিচালন কমিটির সভাপতি দয়াময় মেটে সহ স্থানীয় বন ও বন্যপ্রাণী প্রেমী রাধামাধব মণ্ডল এবং অন্যান্যরা।
পিনাকী বাবু বললেন, কিছু বিকৃতমস্তিষ্ক দুষ্কৃতি অগ্নিসংযোগ করে জঙ্গল ধ্বংস করার চেষ্টা করলেও তা প্রতিরোধ করতে বনদপ্তর দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এরজন্য ফায়ার ওয়াচার নিয়োগ করা হয়েছে। পাশাপাশি বৃক্ষরোপণের মধ্য দিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর। এরজন্য তিনি স্থানীয় মানুষের সহযোগিতা প্রার্থনা করেন।
রাধামাধব বাবু বললেন, জঙ্গলে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ফলে পরিবেশ দূষণ জনিত কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি আমরা স্থানীয়রা। যেহেতু মুষ্টিমেয় কয়েকজন নিজেদের লাভের জন্য এই কাজ করে চলেছে তাই সম্মিলিতভাবে আমাদের সেটা প্রতিরোধ করতে হবে। প্রশাসনের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য তিনি স্থানীয়দের কাছে আবেদন করেন।





