সিরাজ রায় চৌধুরী, বর্ধমান:- বিডিএ চেয়ারপারসনকে জেল হেফাজতের আদেশ দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বদলির নির্দেশ পেলেন বিচারক। মঙ্গলবার এই মামলায় রায় দানের কথা ছিল। এনিয়ে এদিন বিস্তর চাঞ্চল্য ছড়ায় বর্ধমান আদলত চত্বরে।
যদিও, আদালত সূত্রে জানা গেছে, খুনের চেষ্টার মামলায় বিডিএ চেয়ারপারসনকে দোষী সাব্যস্ত করার সাথে বিচারক অরবিন্দ মিশ্রর বদলির কোনো সম্পর্কই নেই।
“এটা রুটিন মাফিক বদলি। সারা রাজ্যের বিভিন্ন কোর্টের মোট ৬০ জন বিচারপতির বদলির নির্দেশ এসেছে কলকাতা হাইকোর্ট থেকে,” বলে জানালেন বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অরূপ দাস। তিনি বলেন, “শুধুমাত্র বর্ধমান আদালতেরই ৬ জন বিচারকের বদলির নির্দেশ এসেছে আজকে।”
বর্ধমান আদালতের ফাষ্ট-ট্র্যাক (সেকেণ্ড) কোর্টের বিচারক অরবিন্দ মিশ্রকে বদলী করা হল ঝাড়গ্রামের সেকেণ্ড কোর্টের অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতে। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের এপিলেট সাইড থেকে বদলী সংক্রান্ত এই নিদের্শ আসে।
ওদিকে, গতকাল খুনের চেষ্টার মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে আদালত ১৩ অভিযুক্তকে জেল হেফাজতের আদেশ দেওয়ার অল্পক্ষণের মধ্যেই আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন বিডিএ চেয়ারপারসন কাকলি তা গুপ্ত এবং তার অন্য তিন রাজনৈতিক সহকর্মী। তাদেরকে দ্রুত বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
আদালত সূত্রে জানাগেছে, বুধবার ঐ মামলার সাজা ঘোষনা করবেন বিচারপতি মিশ্রই। এরই মাঝে বিডিএ চেয়ারপারসন কাকলির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে কলকাতায় এসএসকেএম হাসপতালে স্থানান্তরিত করা হতে পারে, বলে হাসপাতাল সূত্রে জানাগেছে। এদিন, কাকলি সহ অন্যান্য দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের সাথে এসে দেখা করে যান রাজ্যের প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, যা রজনৈতিক ভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রেজনৈতিক মহল।
উল্লেখ্য, বর্ধমান-১নং ব্লকের নাড়ী বেলবাগান মৌজার দাসপাড়ায় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের বাবাকে মারধরের ঘটনায় ১৩জন তৃণমূল নেতৃত্বকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন বিচারক অরবিন্দ মিশ্র। সোমবার থেকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তোলপাড় শুরু হয় বর্ধমান জেলা জুড়ে। এই ১৩জনের মধ্যে বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থার চেয়ারপার্সন তথা বর্ধমান ১নং ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি কাকলী গুপ্ত তাকেও হেফাজতে নেন বিচারক। কিন্তু, তারই মাঝে মঙ্গলবারই এই বদলী সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারী হয়েছে। বর্ধমান আদালতের আইনজীবী মহলের মতে, এই বদলী রুটিন মাফিক। এই বদলীর সঙ্গে কাকলী গুপ্ত তা-দের এই মামলার কোনো সম্পর্ক নেই। হাইকোর্টের নির্দেশানুসারে আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে বদলী হওয়া বিচারকদের নির্দিষ্ট জায়গায় দায়িত্বভার হাতে নিতে হবে। বদলীর ওই নির্দেশ অনুসারে বর্ধমান আদালতের নতুন চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট হিসাবে আসতে চলেছে কাটোয়ার এসিজেএম বিনোদ মাহাতো। বর্ধমান আদালতের বর্ধমান সদর রেজিষ্টার ইন্দ্রজিত দেবকে বদলী করা হয়েছে বীরভূমের রামপুরহাটে।






