সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ- স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীকে দেওয়া সরকারি ঋণের প্রায় প্রায় ৩১ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠল মহিলা সংঘের দুই নেত্রীর বিরুদ্ধে। ঘটনা আসানসোলের সালানপুর থানা এলাকার। থানায় প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছেন সালানপুর ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক (বিডিও)। অভিযুক্ত দুই মহিলা সালানপুরের জিৎপুর উত্তররামপুর এলাকার “আদর্শ সংঘ মহিলা মাল্টিপারপাস সোসাইটি লিমিটেড” নামক সংগঠনের দুই কমিউনিটি সার্ভিস প্রোভাইডার, সংঘনেত্রী বাসন্তী সরেন এবং তাঁর সহযোগী রাসমণি বেসরা।
জানা গেছে, ২০১৭ সালে গঠিত এই মহিলা সংঘ ভারত সরকারের “জাতীয় গ্রামীণ জীবিকা মিশন (এনআরএলএম) প্রকল্পের আওতায় ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ৩১ লক্ষ টাকা পেয়েছিল। এই অর্থ স্থানীয় স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের আর্থিক উন্নতির জন্য বার্ষিক ৬ থেকে ৯ শতাংশ সুদে ঋণ হিসেবে বিতরণ করার কথা ছিল। এছাড়াও, অতি দরিদ্র পরিবারগুলির জন্য সুদমুক্ত ঋণ প্রদানের কথা ছিল। কিন্তু ব্লক মিশন ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের নিয়মিত অডিটে দেখা যায়, সংঘের ক্যাশবুক এবং ব্যাংক স্টেটমেন্টের মধ্যে কোনও মিল নেই। ২০২২ সালের স্ট্যাটুটরি অডিট রিপোর্টেও তহবিল ব্যবহারের কোনও সঠিক নথি পাওয়া যায়নি। বারবার তদন্তে তছরুপের বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ায় চলতি মাসে সালানপুর ব্লকের বিডিও দেবাঞ্জন বিশ্বাস সালানপুর থানায় একটি মামলা (কেস নং – ৫৮/২৫) দায়ের করেন। পুলিশ বাসন্তী সরেন এবং রাসমণি বেসরার বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।
সালানপুর ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক (বিডিও) দেবাঞ্জন বিশ্বাস জানান, গ্রামীণ মহিলাদের আর্থিক স্বনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের জন্য স্বল্প সুদে ঋণ প্রদানের উদ্দেশ্যে এই সংঘকে দেওয়া অর্থ সম্পূর্ণরূপে আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে তথ্য পাওয়ার পরই অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে এবং তদন্তে সব ধরনের সহযোগিতা ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রদান করা হবে।
উল্লেখ্য, প্রায় এক বছর আগে আছড়া পঞ্চায়েত এলাকার একটি কমিউনিটি হলে এই বিষয় নিয়ে বৈঠকের সময় উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। তখন তছরুপের অভিযোগ উঠলেও বিষয়টি কিছুটা ধামাচাপা পড়ে যায়। তবে এবার অভিযোগ দায়েরের মাধ্যমে ঘটনা নতুন মোড় নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।





