eaibanglai
Homeএই বাংলায়জিএম ও এজেন্টের যোগসাজশে ইসিএলে অবৈধ কয়লা কারবার, অভিযোগ বিজেপির

জিএম ও এজেন্টের যোগসাজশে ইসিএলে অবৈধ কয়লা কারবার, অভিযোগ বিজেপির

সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ– জিএম ও এজেন্টের যোগসাজশে ইসিএলের ঝাঁঝড়া প্রজেক্টে অবৈধ কয়লা কারবার চলছে। সোমবার আসানসোলের জাতীয় সড়ক সংলগ্ন শীতলায় বিজেপি জেলা কার্যালয়ে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে এমনই বিস্ফোরক দাবি করলেন আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র তথা বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি। এই অভিযোগের পক্ষে তাঁর কাছে উপযুক্ত প্রমাণ রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি এমনকি এই অবৈধ কারবারের বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেস ও তার নেতৃত্ব নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী দায় অস্বীকার করতে পারেন বলেও এদিন দাবি করেন তিনি। এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে জিতেন্দ্র তিওয়ারির সঙ্গে ছিলেন বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবতনু ভট্টাচার্যও।

সাংবাদিক বৈঠকে জিতেন্দ্র তিওয়ারি অবৈধ কয়লা কারবারের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে গিয়ে বলেন, “ঝাঁঝড়া প্রজেক্টের জেনারেল ম্যানেজার এবং এজেন্টের যোগসাজশে অবৈধ কয়লা ব্যবসা করা হচ্ছে। এই অবৈধ ব্যবসা দুটি উপায়ে চলছে। প্রথমটি হলো, কয়লা তোলার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত রিপোর্ট করা। এক্ষেত্রে, খনন করা কয়লার পরিমাণের চেয়ে বেশি রিপোর্ট করা হয়। দ্বিতীয় দিকটি হল, কয়লা মাফিয়াদের কয়লা পাচার করা। ঝাঁঝড়া প্রজেক্টের পক্ষ থেকেই এই সব করা হয়। প্রতি বছর মার্চ মাসে কয়লা খননের হিসাব করা হয়। কয়লা চুরির ঘটনায় ধরা না পড়ার জন্য, মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে কালো কয়লার ধুলো অর্ডার করা হয়। ওজন সঠিক রাখার জন্য কয়লার সাথে সেই ধুলো মিশিয়ে দেওয়া হয়।”

অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, “কয়েক মাস ধরে আমি এই বিষয়ে ওই এলাকা থেকে অভিযোগ পেয়ে আসছিলাম। কিন্তু সুনির্দিষ্ট প্রমাণের অভাবে আমি এই বিষয়ে কিছু বলিনি। তবে এখন কয়লার সাথে কালো কয়লার ধুলো মেশানোর একটি ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। এর বাইরেও, বিজেপির কাছে আরও অনেক প্রমাণ রয়েছে। যে কারণে আমরা এখন এই বিষয়ে প্রকাশ্যে নিয়ে এলাম।” পাশাপাশি তিনি এবিষয়ে তৃণমূল নেতৃত্বকে আক্রমণ করে বলেন, “নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী কেবল পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নন, তিনি এই জেলার তৃণমূল সভাপতিও। তাই তৃণমূল কংগ্রেস ও নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী এর থেকে হাত সরাতে পারেন না।” একই সাথে তিনি কটাক্ষের সুরে বলেন , “যদি কয়লা ও বালি চোরাচালান থেকে আয় বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে তৃণমূল কংগ্রেস দল নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।”

একই সাথে, আসানসোল জেলা বিজেপি সভাপতি দেবতনু ভট্টাচার্যও ঝাঁঝড়া প্রজেক্টে দুর্নীতির অভিযোগ করেন। তিনি এই প্রসঙ্গে পান্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর জড়িত থাকারও দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “বিজেপি জাতীয় সম্পদের এই ধরনের চুরি সহ্য করবে না। যদি এটা বন্ধ না করা হয়, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন এর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আগামী দিনে বিজেপি বৃহৎ আন্দালনো নামবে।”

অন্যদিকে তাঁদের বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক তথা পশ্চিম বর্ধমান জেলার তৃণমূল সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন , “রাজনৈতিকভাবে বিজেপির পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে। যে কারণে তারা খবরের শিরোনামে থাকার জন্য এই ধরণের ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে। তাঁর বা তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও কর্মীর কোন ধরনের অবৈধ ব্যবসার সাথে যোগসূত্র নেই। এই সমস্ত অভিযোগ তাঁকে এবং তাঁর দলকে অপমান করার জন্য করা হচ্ছে। তাতে কিছু হবেনা।” পাশাপাশি তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, “ইসিএলের কোলিয়ারি তো কেন্দ্র সরকারের। সেখানে তো সবকিছুই কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিজেপির নিয়ন্ত্রণে। তারা কি করছে? নিজেদের গাফিলতি আড়াল করতে, অন্যের ঘাড়ে দোষ দিচ্ছে। বাংলার মানুষেরা সব দেখছেন।”

যদিও এই পুরো বিষয়টি নিয়ে ইসিএলের ঝাঁঝড়া প্রজেক্ট কর্তৃপক্ষ বা ইসিএলের আধিকারিকদের কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় নি।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments