সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ– “এই বাংলায় কে বড় হিন্দু তার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। শুরু হয়েছে মন্দির, মন্দির খেলা” আসানসোলে থেকে বিজেপি ও তৃণমুলকে একযোগে আক্রমণ করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী।
এদিন আসানসোলে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “এই বাংলায় কে বড় হিন্দু তার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। মোদি বড় হিন্দু না দিদি বড় হিন্দু, তার প্রতিযোগিতা বাংলায় আমরা দেখছি। এই প্রতিযোগিতা বাংলাকে আরও পিছিয়ে দেবে তা নিশ্চিৎ। যেখানে রুটি নেই, রুজি নেই, শিল্প নেই, স্বাস্থ্য নেই, যেখানে যুবক যুবতীদের চাকরি হারাতে হয়, আর জি করের মতো বিভৎস ঘটনা ঘটে সেই রাজ্য সবকিছু বাদ দিয়ে বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী এখন বাংলার ঘরে ঘরে জগন্নাথের প্রসাদ পাঠাচ্ছেন। আরেকটা প্রকল্প দুয়ারে জগন্নাথের প্রসাদ। তা আমাদের জগন্নাথের প্রসাদ খেয়ে পেট ভরবে? না আমাদের রুটি রুজি শিল্প দরকার,চাকরি দরকার, ব্য়বসা দরকার? বাংলার মানুষ তা নিশ্চই ঠিক করবে। এই বাংলায় রাজনীতির নামে যা হচ্ছে তার সঙ্গে রাজনীতির কোনো সংযোগ নেই। শুধুমাত্র ভোটের রাজনীতি করার জন্য বাংলার মানুষকে বিভাজিত করা হচ্ছে, ধর্মের নামে। বাংলাকে ক্রমশ আরও তীক্ষ্ণ সাম্প্রদায়ীক সমীকরণের পথে এগোনের চেষ্টা করা হচ্ছে, এই দুই দলের পক্ষ থেকে। এই দুই দল যদি থাকে বাংলায়, তাহলে আগামী দিনে আরো বেশী সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অভাব হবে বলে আশঙ্কা করা যায়। ২০২৬ সালের বাংলা বিধানসভা নির্বাচনের আগে জনগণকে বিভ্রান্ত করার এটি একটা কৌশল মাত্র। আগের নির্বাচনের আগে যেমন এনআরসি আনা হয়েছিলো। লোকসভা নির্বাচনের আগে রাম মন্দিরের বিষয়টিও সামনে আনা হয়েছিলো। ঠিক একইভাবে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগেও প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতা করা হচ্ছে।”
পাশাপাশি তিনি এও দাবি করেন যে, আসানসোল দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে যা কিছু শিল্পায়ন হয়েছিল তা কংগ্রেস আমলের। যা ডাঃ বিধান চন্দ্র রায় করেছিলেন। কিন্তু তার পরে, বাংলায় যে সরকারই ক্ষমতায় ছিল ও আছে, তারা শিল্পায়নের উপর তেমন জোর দেয়নি। যে কারণে আজ বাংলার প্রতিভা বাইরে চলে যাচ্ছে। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী, প্রতি বছর তাঁর আয়োজিত বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটে যে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ বাংলায় আসে বলে দাবি করেন, বাস্তবতার নিরিখে তা কোথাও দেখা যায় না। কেবল মাত্র কাগজপত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়ে যায়। এদিন তিনি স্পষ্ট বলেন যে, “বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেস বা রাজ্য সরকার কেবল তিনটি কারণে টিকে আছে। একটি হলো দুর্নীতি। দ্বিতীয় হলো গুন্ডা ও পুলিশের যোগসাজশ ও তৃতীয় হলো সাম্প্রদায়িক রাজনীতি এবং অনুদান। এর বাইরে তৃণমূল কংগ্রেসের আর কিছুই নেই।”
প্রসঙ্গত বৃহস্পতিবার তাঁর ব্যক্তিগত কাজে আসানসোলে এসেছিলেন অধীর রঞ্জন । এদিন আসানসোল সার্কিট হাউসেও বেশ কিছুক্ষণ ছিলেন তিনি। সেখানে তাকে রাজ্য সম্পাদক প্রসেনজিৎ পুইতুন্ডি সহ অন্য কংগ্রেসের নেতারা পুষ্পস্তবক দিয়ে সম্বর্ধনা জানান। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দিঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন প্রসঙ্গে প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে একসঙ্গে কেন্দ্র ও রাজ্যেরে শাসক দলকে আক্রমণ করেন।





