নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ- দুর্গাপুরের মিশ্র ইস্পাত কারখানার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী ৮১ বছরের বৃদ্ধের মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য শহরে। মৃত বৃদ্ধের নাম সুবোধ রঞ্জন আর্চার্য। তিনি সিটি সেন্টারের সেল কো-অপারেটিভ এলাকার মধুসূদন দত্ত পথের বাড়িতে একাই থাকতেন। এদিন সকালে ওই বাড়ি থেকেই বৃদ্ধের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ বৃদ্ধের অসুস্থতার কথা বার বার বৃদ্ধের ছেলেকে জানানো সত্ত্বেও সে কোনো কর্ণপাত করেনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় সিটিসেন্টারের বাড়িতে একাই থাকতেন সুবোধ রঞ্জন আর্চার্য। একমাত্র ছেলে রেলে কর্মরত। কলকাতায় পরিবার নিয়ে থাকেন। সে বাবার দেখাশুনার জন্য একজন পরিচারিকা রেখেই দায় সেরেছিল বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। দেখাশুনার কোনো ভার নেয়নি। ফলে বৃদ্ধকে প্রতিবেশীরাই দেখাশুনা করতেন। এদিকে গত কয়েক বছর ধরে একাকিত্ব ও অসুস্থতার কারণে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন বৃদ্ধ। সম্প্রতি গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় তাঁকে হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়েছিল। তার পর বাড়িও ফেরেন। স্থানীয়রা জানান রঞ্জনবাবুর অসুস্থতার কথা ফোন করে বার বার তাঁর ছেলেকে জানানো হয়েছিল। এমনকি শনিবার রাতেও তাঁকে ফোন করা হয়েছিল একবার বাবা দেখে যাওয়ার জন্য। কিন্তু ছেলের সময় হয়নি।
পরিচারিকা অর্চনা ঘোষাল জানান তিনি এক বেলা বাড়ির সব কাজ করে দিতেন। রান্নাও করে দিতেন, বা হোটেল থেকে কিনে খাবার ব্যবস্থা করে দিতেন। হাসপাতাল থেকে ফেরার পর অসুস্থ অবস্থায় নিচের তলার বারান্দাতেই সারাদিন শুয়ে থাকতেন বৃদ্ধ। গায়ে পিঁপড়ে পোকামাকড় উঠত বলে লক্ষণ রেখা কেটে দিয়েছিলেন চারিদিকে। ওই অবস্থায় গত ১৫ দিন পড়েছিলেন। অবশেষে রবিবার সকালে প্রতিবেশীরা দেখেন ওই বারান্দাতেই পড়ে রয়েছেন বৃদ্ধ। বিষয়টি জানিয়ে দুর্গাপুর থানায় খবর দেন তাঁরা। পরে পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
অন্যদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে অবশেষে বাড়িতে আসার কথা জানিয়েছেন মৃত সুবোধ রঞ্জন বাবুর ছেলে।





