জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, গুসকরা পূর্ব বর্ধমান -: মানুষের জীবনের অন্যতম ভয়ংকর নীরব ঘাতক হলো পার্থেনিয়াম। এই গাছের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত সবটাই ক্ষতিকারক। সামান্য বৃষ্টি হতেই জাতীয় সড়ক থেকে শুরু করে রাজ্য সড়ক, নদী বা রেললাইনের ধারে ওদের দেখা যায়। ছোট ছোট সাদা ফুলের গাছগুলির সৌন্দর্যের আড়ালে লুকিয়ে আছে ভয়ংকর মারণ বাণ। এদের স্পর্শে এসে অ্যাজমা, ব্রঙ্কাইটিস, হাঁপানি, অ্যালার্জি, একজিমা প্রভৃতি মারাত্মক রোগে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে ভুগছে, হাত-পা লাল হয়ে যাচ্ছে। এমনকি পরে ত্বকের ক্যান্সারও হতে পারে। এই আগাছা খেলে অবলা গবাদি পশুর অন্ত্রে ঘা দেখা দেয়, দুধ উৎপাদন কমে যায়। এমনকি পার্থেনিয়াম সব্জী উৎপাদন ব্যহত করে, ফসল উৎপাদন কমিয়ে দেয়। এবার এই নীরব ঘাতককে ‘বধ’ করতে সক্রিয় হলো গুসকরা পুরসভা।
গত ১৮ ই মে দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মী প্রদীপ দাস ও একজন সাফাই কর্মীকে সঙ্গী করে ৩ নং ওয়ার্ড সংলগ্ন মেলবন্ধন সেতুতে পৌঁছে যান গুসকরা পুরসভার চেয়ারম্যান কুশল মুখার্জ্জী। তার উপস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট সাফাই কর্মী আধুনিক আগাছা ছেদনকারী যন্ত্রের সাহায্যে সেতুর আশেপাশে থাকা পার্থেনিয়াম গাছগুলি কেটে ফেলে দেয়। প্রসঙ্গত, কুনুর নদীর উপর থাকা মেলবন্ধন সেতু পুরসভার ১ নং ও ২ নং ওয়ার্ডের সঙ্গে মূল শহরের দূরত্ব অনেকটাই কমিয়ে দেয়। এই সেতুর উপর দিয়ে ওই দুটি ওয়ার্ড ছাড়াও পঞ্চায়েত এলাকায় বসবাসকারী বহু মানুষ যাতায়াত করে। কাছাকাছি থাকা বাসিন্দারা তাদের গবাদি পশুচারণ করে। অথচ সেতুর আশেপাশে প্রচুর পার্থেনিয়াম গাছ দেখা যায়। উদ্ভিদবিদ্যার শিক্ষিকা অঙ্কনা ব্যানার্জ্জী বললেন – আমাদের অজ্ঞানতার জন্যেই পার্থেনিয়ামের এত বাড়বাড়ন্ত। গাছের উপর কেরোসিন বা নুন-জল ছিটিয়ে দিলে গাছটি মরে যায়। তবে কাজটা সাবধানে করতে হবে। মুখে মাস্ক ও হাতে গ্লাভস পড়ে থাকতে হবে। গোটা শরীর ঢেকে রাখতে হবে। পাশাপাশি এর কুফল সম্পর্কে অবিলম্বে সরকারি ও বেসরকারি স্তরে প্রচার শুরু করতে হবে। পার্থেনিয়মের বিরুদ্ধে আমাদের কোমর বেঁধে লড়াইয়ে নামতে হবে। চেয়ারম্যান বললেন, গুসকরা শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য আমরা পুরসভার পক্ষ থেকে একটি কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। তারই অঙ্গ হিসাবে মানুষের পক্ষে ক্ষতিকর পার্থেনিয়ম গাছ কাটার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। গুসকরা পুরসভার এই এলাকায় মূলত এই গাছ দেখতে পাওয়া যায়।





